পাঠ্যপুস্তক
এখনই সেই “সেবক” পাঠ পুনর্বার পড়িয়া দেখ—
“সেবক শ্রীরমানাথ দেবশর্মণঃ
“প্রণামাঃ শতসহস্রনিবেদনঞ্চ বিশেষং”—এখন তোমার বিশেষ নিবেদন কি, তাহা সহজ বাঙ্গালায় লিখিবে, যথা—
“মহাশয়ের আজ্ঞাপত্র প্রাপ্ত হইয়া শিরোধার্য করিলাম। আপনি যেরূপ লেখা পড়া ও আহারাদির নিয়ম বলিয়া দিয়াছেন, আমি সেই নিয়মানুসারেই চলিব। আমি জ্বরে কিছু কষ্ট পাইতেছি। চিকিৎসা করাইতেছি। ইতি, তারিখ সন ১২৮২। ২৭শে শ্রাবণ।”
এই “ইতি” শব্দের অন্বয়, উপরে যে “নিবেদনঞ্চ বিশেষং”—লিখিয়াছ, তাহা সঙ্গে “নিবেদনঞ্চ বিশেষং ইতি”, অর্থাৎ এই আমার বিশেষ নিবেদন।”
উপরে লেখকের নাম আছে, পত্রের নীচে আর তোমার নাম লিখিতে হইবে না। কিন্তু অনেকে শেষে নাম লেখেন। তাঁহারা সেবক পাঠ উপরে না লিখিয়া নীচে লেখেন। যথা—
“প্রণামাঃ শতসহস্রনিবেদনঞ্চ বিশেষং—
মহাশয়ের আজ্ঞাপত্র পাইয়া” ইত্যাদি লিখিয়া শেষে লেখেন, “ইতি, তারিখ সন ১২৮২। ২৭শে শ্রাবণ।
সেবক শ্রীরমানাথ দেবশর্মণঃ।
উপরে “নিবেদনং” পদ আছে, এজন্য “দেবশর্মণঃ” লেখা হইল, “দেবশর্মার নিবেদন” বুঝাইল। নহিলে “দেবশর্মা লিখিতে হইত।
এক্ষণে পত্র সমাপ্ত হইল। এখন পত্র মুড়িয়া তাহার উপরে শিরোনাম লিখিতে হইবে। যেমন পত্রের পাঠ আছে, তেমনই শিরোনামেরও পাঠ আছে। পূজ্য ব্যক্তি, যাঁহাকে সেবক পাঠ লিখিতে হয়, তাঁহাকে শিরোনামে “পরমপূজনীয়” লিখিতে হয়। নামের পর “শ্রীচরণেষু” বা “শ্রীচরণকমলেষু” কি এইরূপ অন্য কোন সম্মানসূচক পদ লিখিতে হয়। যথা—
“পরমপূজনীয়,
শ্রীযুক্ত বাবু মাধবচন্দ্র ঘোষাল
মাতুল মহাশয় শ্রীচরণকমলেষু।”
নীচে পত্রের ঠিকানা লিখিয়া দিবে, যথা—দেয়, (বা দেনা) মোং বর্ধমান।
পূজ্য ব্যক্তিকে “প্রণাম” করিতে হয়, তুল্য ব্যক্তিকে “নমস্কার” করিতে হয়। এই জন্য তুল্য ব্যক্তিকে যে পত্র লেখা যায়, তাহার পাঠের নাম “নমস্কার” পাঠ। যথা—
“সবিনয় নমস্কারাঃ নিবেদনঞ্চ বিশেষং অথবা বাঙ্গালায়—
“বিনয় পূর্বক নমস্কার নিবেদন।” অনেকে সংক্ষেপ করিয়া শুধু লেখেন—
“নমস্কার নিবেদন।”
আগে রীতি ছিল, লেখকের নাম পত্রের প্রথমে থাকিত, যথা—
“আজ্ঞাকারী শ্রীরমানাথ দেবশর্মণঃ” কিন্তু এখন “সেবক” পাঠ ভিন্ন যে পদ্ধতি প্রায় অপ্রচলিত হইয়াছে। ইংরাজী পত্রের নিয়মানুসারে, নাম শেষে লেখা হয়। শিরোনামে পূর্বরীত্যনুসারে “মদেকদয়” বা “পোষ্টৃবর” কি এমনই একটি ঘনিষ্ঠতাসূচক পদ ব্যবহৃত হইত। এখন, সে সকল পদ তত ব্যবহৃত হয় না। “মান্যবর” কি “বিজ্ঞবর” কি এমনই অপর কোন নিঃসম্বন্ধ পদ ব্যবহৃত হয়। যথা—