কিন্তু অনেকেই এ সকল পরিত্যাগ করিয়াছেন। আত্মীয় ব্যক্তি হইলে, তাঁহারা “প্রিয়তমেষু” “প্রিয়বরেষু” এইরূপ লেখেন; বিশেষ আত্মীয়তা না থাকিলে শুধু “কল্যাণবরেষু” লিখিয়া থাকেন। শিরোনামে, “পরমকল্যাণীয়” বা “কল্যাণীয়া” পাঠ লিখিতে হয়। শেষে কিছু আশীর্বাদ বাক্য থাকা চাই। সকল স্থলে “শ্রীযুক্ত” পরিবর্তে “শ্রীমান্” শব্দ ব্যবহৃত হয়। যথা—

                 “পরমকল্যাণীয়

                      শ্রীমান্ বাবু রাধানাথ দাস

                               বাবাজীউ চিরজীবেষু।”

                 “কল্যাণীয়

                      শ্রীমান্ নিশিকান্ত ঘোষ

                               ভাইজীউ মঙ্গলাস্পদেষু।”

শূদ্রকে পত্র লিখিতে গেলে, ব্রাহ্মণের আশীর্বাদ পাঠ লেখাই উচিত। ব্রাহ্মণকে পত্র লিখিতে হইলে শূদ্রের প্রণাম পাঠ লেখাই কর্তব্য। কিন্তু এখন অনেক শূদ্র ইহা মানেন না।

স্থূল কথা, এখন অনেক ইংরাজি পত্র লেখার প্রথানুসারে লিখিতে হয়। তাহার দুই একটি উদাহরণ দিয়া ক্ষান্ত হইব।

১। “প্রিয়বর,

তোমার পত্র পাইলাম। যে টাকা পাঠাইয়াছি, তাহা সাবধানে খরচ করিও। তোমার বিষয়-কর্ম কিরূপ চলিতেছে সবিশেষ লিখিও। শারীরিক কুশলবার্তা লিখিতে ত্রুটি করিও না। ইতি, তারিখ ১৮৮৩ সাল, ৭ই মার্চ।

নিতান্ত মঙ্গলাকাঙ্ক্ষী শ্রীরাধানাথ ঘোষ।”

২। “পণ্ডিতাগ্রগণ্য শ্রীযুক্ত রাধাকান্ত বিদ্যারত্ন

মহাশয় অশেষগুণালঙ্কৃতেষু।

পণ্ডিতবর,

আপনার প্রণীত নূতন গ্রন্থখানি পাঠ করিয়া যার পর নাই পরিতোষ লাভ করিয়াছি। ভরসা করি, আপনি নিত্য নূতন গ্রন্থ প্রচার পূর্বক স্বদেশকে চরিতার্থ করিবেন; ইতি, তারিখ ১২৮২ সাল, ২৭শে শ্রাবণ।

একান্ত বশংবদ

   শ্রীহরিদাস দত্ত”