উ। উহার বাড়ী কোথায়, কেন বলিতেছেন না?

র। বলিবার অধিকার নাই।

উ। স্বামীর বাড়ী কোথায়?

র। ঐ উত্তর।

উ। স্বামী জীবিত আছে?

র। আছে।

উ। ঐ স্ত্রীলোকটি এখন কোথায়?

র। আপনার এই বাড়ীতে।

স্বামী মহাশয় চমকিয়া উঠিলেন। বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনি কিপ্রকারে জানিলেন?”

র। আমার বলিবার অধিকার নাই। আপনার জেরা কি ফুরাইল?

উ। ফুরাইল। কিন্তু আপনি ত জিজ্ঞাসা করিলেন না যে, আমি কেন আপনাকে এসকল কথা জিজ্ঞাসা করিলাম?

র। দুই কারণে জিজ্ঞাসা করিলাম না। একটি এই যে, জিজ্ঞাসা করিলে, আপনি বলিবেন না। সত্য কিনা?

উ। সত্য। দ্বিতীয় কারণটি কি?

র। আমি জানি, যে জন্য জিজ্ঞাসা করিতেছেন।

উ। তাও জানেন? কি বলুন দেখি?

র। তা বলিব না।

উ। আচ্ছা, আপনি ত সব জানেন দেখিতেছি। বলুন দেখি, আমি যে অভিসন্ধি করিতেছি, তাহা ঘটিতে পারে কিনা?

র। খুব ঘটিতে পারে। আপনি কুমুদিনীকে জিজ্ঞাসা করিবেন।

উ। আর একটি কথা। আপনি কুমুদিনীর সম্বন্ধে যাহা জানেন, তাহা সব একটা কাগজে লিখিয়া দিয়া দস্তখত করিয়া দিতে পারেন?

র। পারি—এক সর্তে। আমি লিখিয়া পুলিন্দায় সীল করিয়া কুমুদিনীর কাছে দিয়া যাইব।

আপনি এক্ষণে তাহা পড়িতে পারিবেন না। দেশে গিয়া পড়িবেন। রাজি?

স্বামী মহাশয় অনেক ভাবিয়া বলিলেন, “রাজি। আমার অভিপ্রায়ের পোষক হইবে ত?”

র। হইবে।

অন্যান্য কথার পর রমণ বাবু উঠিয়া গেলেন। উ-বাবু আমার নিকট আসিলেন।

আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “এ সব কথা হইতেছিল কেন?”

তিনি বলিলেন, “সব শুনিয়াছ না কি?”

আমি। হাঁ শুনিয়াছি। ভাবিতেছিলাম, আমি ত তোমায় খুন করিয়া, ফাঁসি গিয়াছি। ফাঁসির পর আর তদারক কেন?

তিনি। এখনকার আইনে তা হইতে পারে।

উ। যাক—এ সব বাজে কথা। উহার চরিত্র কেমন?

র। অনিন্দনীয়। আমাদের বুড়ী রাঁধুনীটাকে বড় ক্ষেপাইত। তা ছাড়া একটি দোষও নাই।

উ। স্ত্রীলোকের চরিত্রদোষের কথা জিজ্ঞাসা করিতেছি।

র। এমন উৎকৃষ্ট চরিত্র দেখা যায় না।