রাজসিংহ
দে। যোধপুরী বেগম আমাকে দিয়াছেন।
চ। তুমি তাঁর কে?
দে। আমি তার বাঁদী।
চ। কেনই বা এ পাঞ্জা লইয়া এখানে আসিয়াছ?
দেবী তখন সকল কথা বুঝাইয়া বলিল। শুনিয়া নির্মরল ও চঞ্চল পরস্পরের মুখপানে চাহিতে লাগিলেন।
চঞ্চল, দেবীকে পুরস্কৃত করিয়া বিদায় দিলেন।
দেবী যাইবার সময় যোধপুরীর পাঞ্জাখানী লইয়া গেল না। ইচ্ছাপূর্বঞক রাখিয়া গেল। মনে করিল, “কোথায় ফেলিয়া দিব,-কে কুড়াইয়া নিবে!” এই ভাবিয়া দেবী চঞ্চলকুমারীর নিকট পাঞ্জা ফেলিয়া গেল । সে গেলে পর চঞ্চলকুমারী বলিলেন, “নির্মগল ! উহাকে ডাক; সে পাঞ্জাখানা ফেলিয়া গিয়াছে |”
নি । ফেলিয়া যায় নাই–বোধ হইল যে, ইচ্ছাপূর্বদক রাখিয়া গিয়াছে।
চ। আমি নিয়া কি করিব?
নির্মিল । এখন রাখ, কোন সময়ে না কোন সময়ে যোধপুরীকে ফেরৎ দিতে পারিবে।
চ। তা যাই হোক, বেগমের কথায় আমার বড় সাহস বাড়িল। আমরা দুইটি বালিকায় কি পরামর্শ করিতেছিলাম–তা ভাল, কি মন্দ–ঘটিবে কি না ঘটিবে, কিছুই বুঝিতে পারিতেছিলাম না। এখন সাহস হইয়াছে। রাজসিংহের আশ্রয় গ্রহণ করাই ভাল।
নি । সে ত অনেক কাল জানি।
এই বলিয়া নির্ম ল হাসিল। চঞ্চলও মাথা হেঁট করিয়া হাসিল।
নির্মিল উঠিয়া গেল। কিন্তু তাহার মনে কিছুমাত্র ভরসা হইল না। সে কাঁদিতে কাঁদিতে গেল।