দ। সেই দরিয়া!

ম। দুশমন! সয়তান! তুই এখানে কেন?

দ। জান না, আমি সংবাদ বেচি?

মবারক শিহরিল। দরিয়া বিবি বলিল, “রাজপুত্রীর সঙ্গে বিবাহ কি হইবে?”

ম। রাজপুত্রী কে?

দ। শাহজাদী জেব-উন্নিসা বেগম সাহেবা। শাহজাদী কি রাজপুত্রী নহে?

ম। আমি তোকে এইখানে খুন করিব।

দ। তবে আমি হাল্লা করি।

ম। আচ্ছা, না হয়, খুন না-ই করিলাম। তুই কার কাছে খবর বেচিতে আসিয়াছিস বল্।

দ। বলিব বলিয়াই দাঁড়াইয়া আছি। হজ‍‍রৎ জেব-উন্নিসা বেগমের কাছে।

ম। কি খবর বেচিবি?

দ। যে আজ তুমি বাজারে জ্যোতিষীর কাছে, আপনার কেস্মমত জানিতে গিয়াছিলে। তাতে জ্যোতিষী তোমাকে শাহজাদী বিবাহ করিতে বলিয়াছে। তাহা হইলে তোমার তরক্কী হইবে।

ম। দরিয়া বিবি! আমি তোমার কি অপরাধ করিয়াছি যে, তুমি আমার উপর এই দৌরাত্ম্য করিতে প্রস্তুত?

দ। কি করিয়াছ? তুমি আমার কি না করিয়াছ? তুমি যাহা করিয়াছ, তার অপেক্ষা স্ত্রীলোকের অনিষ্ট কি আছে?

ম। কেন পিয়ারি! আমার মত কত আছে।

দ। এমন পাপিষ্ঠ আর নাই।

ম। আমি পাপিষ্ঠ নই। কিন্তু এখানে দাঁড়াইয়া এত কথা চলিতে পারে না। স্থানান্তরে তুমি আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করিও। আমি সব বুঝাইয়া দিব।

এই বলিয়া মবারক আবার জেব-উন্নিসার কাছে ফিরিয়া গেল। জেব-উন্নিসাকে বলিল, “আমি পুনর্বা র আসিয়াছি, এ বেয়াদবি মাফ করিতে হইতেছে। বলিতে আসিয়াছি যে, দরিয়া বিবি হাজির আছে–এখনই আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করিবে। সে পাগল। সে আপনার কাছে, আমার কোন নিন্দাবাদ করিলে আমার উত্তর না লইয়া আমার প্রতি আপনি কোপ করিবেন না |”

জেব-উন্নিসা বলিলেন, “তোমার উপর কোপ করিবার আমার সাধ্য নাই। যদি তোমার উপর কখন রাগ করি, তবে আমিই দু:খ পাইব। তোমার নিন্দা আমি কাণে শুনি না |”

“এ দাসের উপর এইরূপ অনুগ্রহ চিরকাল রাখিবেন” এই বলিয়া মবারক পুনর্বাদর বিদায় গ্রহণ করিল।