পাঠ্যপুস্তক
পরীক্ষার্থ
হস্তী, কুক্কুর, চন্দ্র, সূর্য, বৃক্ষ, বিদ্যা, মাতাপিতা, রাগ, সাহস, শিক্ষক দয়া।
অষ্টম পাঠ
অনেক বালককে প্রবন্ধ লিখিতে বলিলে তাহারা খুঁজিয়া পায় না যে, কি লিখিতে হইবে। যদি বলা যায় যে, অশ্ব সম্বন্ধে একটি প্রবন্ধ লেখ; তাহার খুঁজিয়া পায় না যে, অশ্ব সম্বন্ধে কি প্রবন্ধ লিখিবে। এই সকল বালকের সাহায্য জন্য কতকগুলি যুক্তি বলিয়া দিতেছি।
১। প্রথমে বিষয়টি কি তাহা বর্ণন করিবে।
২। তার পর তাহার জাতিভেদ বা প্রকারভেদ বা সে সম্বন্ধে মতভেদ থাকিলে তাহা বুঝাইবে।
৩। তাহার দোষগুণের বা কার্যের বিচার করিবে।
৪। কিসে সেই বিষয়ে মনুষ্যের উপকার বা উন্নতি হইতে পারে, তাহার বিচার করিবে। অশ্বের উদাহরণে ইহা বুঝাইতেছি।
১। বর্ণনা
অশ্ব চতুষ্পদ জন্তু বিশেষ।
২। জাতিভেদ
অশ্ব অনেক জাতীয় আছে।—যথা আরবী, কাবুলী, তুরকী, ওয়েলর, টাটু ইত্যাদি।
৩। গুণ দোষ বিচার
অশ্ব, পশুজাতি মধ্যে বিশেষ বলবান ও দ্রুতগামী। অশ্বের আরও গুণ এই যে, অশ্ব সহজে মনুষ্যের বশ হয়। এজন্য মানুষ অশ্ব হইতে অনেক উপকার পায়।
৪। উপকার
মনুষ্য অশ্বকে বশ করিয়া তাহার পৃষ্ঠে আরোহণ পূর্বক যথেচ্ছা ভ্রমণ করে। যে পথ অনেক বিলম্বে যাইতে হইত, অথবা শ্রমাধিক্যবশতঃ যাওয়াই যাইত না, অশ্বের সাহায্যে তাহা অল্প সময়ে যাওয়া যায়। মনুষ্য গাড়ি প্রস্তুত করিয়া, তাহাতে অশ্বযোজন করিয়া, সুখে আসীন হইয়া বিচরণ করে। যুদ্ধকালে অশ্ব, যোদ্ধার বিশেষ সহায়। ইহা ভিন্ন অনেক দেশে অশ্বের দ্বারা ভারবহন ও হলাকর্ষণ কার্যও নির্বাহ হয়।
এই যে উদাহরণ দেওয়া গেল, ইহা সংক্ষিপ্ত। ইচ্ছা করিলে ইহার সম্প্রসারণ করিতে পার। যথা, বর্ণনায়—“অশ্ব চতুষ্পদ জন্তু বিশেষ” লেখা গিয়াছে। কিন্তু, চতুষ্পদ জন্তু কেহ মাংসাহারী, কেহ উদ্ভিজ্জাহারী, কেহ উভয়হারী, অতএব অশ্ব ইহার কোন্ শ্রেণীভুক্ত, তাহা লেখা উচিত। যথা—
“অশ্ব উদ্ভিজ্জ মাত্র খায়, মাংস খায় না।” কিন্তু আরও অনেক চতুষ্পদ আছে যে, তাহারা কেবল উদ্ভিজ্জ খায়। যথা, গোমহিষাদি। অতএব আরও বিশেষ করিয়া লিখিতে পার যে, “যে সকল চতুষ্পদ উদ্ভিজ্জাহারী, তাহাদের মধ্যে কতকগুলির শৃঙ্গ আছে, কতকগুলির শৃঙ্গ নাই। অশ্ব দ্বিতীয় শ্রেণীর মধ্যে।”
এইরূপ আরও সম্প্রসারণ করা যায়।
এইরূপে (২) জাতিভেদ, (৩) দোষ-গুণ, (৪) উপকার—এ সকলেরও সম্প্রসারণ করা যায়।
পরীক্ষার্থ
নিম্নলিখিত কয়েকটি বিষয়ে এইরূপ সম্প্রসারিত প্রবন্ধ লেখ।
হস্তী, কুক্কুর, চন্দ্র, সূর্য, বৃক্ষ, বিদ্যা, মাতাপিতা, রাগ, সাহস, শিক্ষক, দয়া।
ইহাও স্মরণ রাখিবে যে, সকল বিষয়েই প্রবন্ধকে ঐরূপ চারি ভাগে বিভক্ত করা যায় না। কখন কোনটি ছাড়িয়া দিতে হয়। যথা, চন্দ্র সূর্যের জাতিভেদ নাই—উহা ছাড়িয়া দিবে; তবে চন্দ্র সূর্য সম্বন্ধে লোকের মতভেদ আছে, পার ত, তাহা লিখিবে। আর এই চারিটি ভাগ ছাড়া আর যাহা কিছু বক্তব্য লিখিতে চাও তাহাতে আপত্তি নাই। বিশেষ কোন বিষয়ে প্রবন্ধ লিখিতে গেলে পূর্বগামী লেখকদিগের মত সঙ্কলন করা প্রথা আছে ; আবশ্যক মতে তাহা করিতে পার। ভাল বুঝিলে তাহার প্রতিবাদ করিতে পার।