বসন্তের নিকট বিদায়
ত্রিপদী
হা বসন্ত মনোহর,           হা মোহন রূপধর,
হা রে হৃদি বিচঞ্চলকর।
লইয়ে রূপের ভার,        কেন কর পরিহার,
এ মহী মণ্ডল মনোহর ||
আর কিছু দিন ওরে,       রহ রে ধরণী পরে,
বিদায় তোমারে নারি দিতে।
জানি জানি মরি মরি,       এ পাপ পৃথিবী পরি
নারো আর দিনেক রহিতে ||
যতেক তোমার শোভা,    মোহকর মনোলোভা,
উড়ে যায় নহে স্থিরতর।
খর দিনতর করে,         ক্রমেতে মলিন করে,
মোহকর সে শোভা নিকর ||
তাপিত কুসুম ফুলে,     মাথা তুলে দুলে দুলে,
মৃদু রবে মরুতেরে কয়।
“পাপ তাপে দহে দেহ,       বসন্ত আনিয়া দেহ,
মরি সে কি ফিরিবার নয় ||”
না কুসুম সুন্দরী রে,     আসিবে আসিবে ফিরে,
সাধের বসন্ত মনোহর।
কিন্তু সে আসিলে ফের, তোরা তো পাবি নে টের,
আজি যাবে পড়িয়া ভূপর ||
আ মরি অমনি দুখে,      বিদরে আমার বুকে,
এ অসার সংসারে রহিয়ে।
ফুলের বসন্ত মত,          আশার যতন যত,
যে সকল সুখের লাগিয়ে ||
আশা মোর সে বসন্ত,     বুঝি আমি হলে অন্ত,
তবে আসি হবে রে ঘটনা।
প্রখর দুখের রবি,           চিরদিন বুঝি রবি,
অভাগারে দিবারে যন্ত্রণা ||
মরি আরে কেন আর,          কেঁদে মরি এ প্রকার,
মানবেরি এমন কপাল।
ইহ লোকে চির দীন,        হৃদি রবে সুখহীন,
মনোদুখে কাটাইবে কাল ||