বদনে ললিত রেখা কত হয়ে যায়।
রক্তিম নীরদ যেন শারদ সন্ধ্যায় ||
গলিল নয়নপদ্ম; মুগ্ধ তার মন,
প্রাণ মন জ্ঞান ধন জীবন যৌবন,
সকলি করেছে যেন গীতে সমর্পণ ||
কোথা হতে আসে সেই সুমধুর গান?
কেন তাতে এত আশা? কে হরিল প্রাণ?
ললিতা তাহার নাম-রাজার নন্দিনী।
জননী না ছিল তার, বিমাতা বাঘিনী।
রাজা বড় নিষ্ঠুর সতত দেয় জ্বালা;
গোপনে কতই কাঁদে মাতৃহীনা বালা।
দুর্জ্জনের সাথে তার বিবাহ সম্বন্ধ-
শুনে কেঁদে কেঁদে তার চক্ষু যেন অন্ধ।
মন্মথ নামেতে যুবা, সুঠাম, সুন্দর,
বচনে অমিয় ক্ষরে নারীমনোহর।
মোহিল ললিতাচিত তার দরশনে।
গোপনে বিবাহ হৈল মিলিল দুজনে।
জানিল বিবাহবার্ত্তা দুরন্ত রাজন্।
কন্যারে ডাকিয়া বলে পরুষ বচন ||
এ পুরী আঁধার কেন কর কলঙ্কিনী।
শীঘ্র যাও দেশান্তরে না হতে যামিনী ||
কাল যদি দেখি তোরে, বধিব পরাণ।
ভয়ে বালা সেই দণ্ডে করিলা প্রস্থান ||
মন্মথ লইয়া তারে তুলিল নৌকায়।
ভয়ে ভীত দুই জনে নদী বেয়ে যায় ||
পথিমধ্যে দস্যুদল আসিয়া রোধিল।
ললিতারে কাড়ি লয়ে বনে প্রবেশিল ||
অলঙ্কার কেড়ে নিয়ে ছেড়ে দিল তারে।
ললিতা একাকী ফিরে নদী ধারে ধারে ||