গভীর সঙ্গীত সেই! ভাসে নদী দিয়ে।
ভাঙ্গিল গভীর স্তব্ধ স্বরে শিহরিয়ে-
কখন কোমল স্থির করুণার স্বরে,
যেন কোন বিরহিণী কেঁদে কেঁদে মরে ||
শুনিয়ে তা মনে হয়, ঈষৎ আভাস,
যেন কত সুখস্বপ্ন, হয়েছে বিনাশ;
কি কারণে দুঃখোদয় কিসের স্মরণে,
কিছুই বুঝি না তবু, উচাটন মনে ||
ফুলিয়া উঠেছে ধ্বনি, স্থির শূন্য কেটে।
ইচ্ছা করে গগনেতে উঠে যাই ফেটে ||
ছেঁড়ে হৃদয়ের ডোর গভীর যাতনে।
ইচ্ছা করে গলি গিয়ে মিশি গান সনে ||
আর যদি সঙ্গীতের দেহ দেখা পাই!
যতনেতে আলিঙ্গিয়া, মোহে মরে যাই ||
নদীতীরে বৃক্ষ নাহি ছিল এক স্থানে।
দীর্ঘ তৃণে চন্দ্রকর জ্বলিছে সেখানে ||
ছোট গাছে তারামত ফুল্ল পুষ্পদলে।
স্থির তার প্রতিরূপ স্থির নদীজলে ||
সুখস্বপ্নে যেন তারা, নিদ্রাভরে হাসে।
গগন গুমুরে মরে, সুখময় বাসে ||
সেই স্থানে বসি এক নারী একাকিনী।
ফুলহীন বনে যেন স্থলকমলিনী ||
মিশেছে সে চন্দ্রিকায়; ভাবে তার চিত্ত
শুধু সে স্বপ্নের ছায়া, অসত্য অনিতা ||
যৌবন আশার সম ফুল্ল রূপ তার।
দেখিয়া ফিরালে আঁখি, দেখি ফিরে বার ||
স্থিরা ধীরা সুকোমলা বিমলা অবলা।
সবে নব পুরিতেছে যৌবনের কলা ||
মোহন সঙ্গীতে মন বেঁধেছে যতনে।
প্রেম যেন শুনিতেছে আশার বচনে ||