ধর্ম্মতত্ত্ব
পঞ্চদশ অধ্যায়-ভক্তি
ভগবদ্গীতা-জ্ঞান
গুরু। এক্ষণে জ্ঞান সম্বন্ধে ভগবদুক্তির সার মর্ম্ম শ্রবণ কর। কর্ম্মের কথা বলিয়া, চতুর্থাধ্যায়ে আপনার অবতার-কথন সময়ে বলিতেছেন,-
বীতরাগভয়ক্রোধা মন্ময়া মামুপাশ্রিতাঃ।
বহবো জ্ঞানতপসা পুতা মদ্ভাবমাগতাঃ || ৪।১০
ইহার ভাবার্থ এই যে, অনেকে বিগতরাগভয়ক্রোধ, মন্ময় (ঈশ্বরময়) এবং আমার উপাশ্রিত হইয়া জ্ঞান তপের দ্বারা পবিত্র হইয়া আমার ভাব অর্থাৎ ঈশ্বরত্ব বা মোক্ষ প্রাপ্ত হইয়াছে।
শিষ্য। এই জ্ঞান কি প্রকার?
গুরু। যে জ্ঞানের দ্বারা জীব সমুদায় ভূতকে আত্মাতে এবং ঈশ্বরে দেখিতে পায়। যথা-
যেন ভূতান্যশেষেণ দ্রক্ষস্যাত্মন্যথোময়ি। ৪।৩৫
শিষ্য। সে জ্ঞান কিরূপে লাভ করিব?
গুরু। ভগবান্ তাহার উপায় এই বলিয়াছেন,
তদ্বিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া।
উপদেক্ষ্যন্তি তে জ্ঞানং জ্ঞানিনস্তত্ত্বদর্শিনঃ || ৪।৩৪
অর্থাৎ প্রণিপাত, জিজ্ঞাসা এবং সেবার দ্বারা জ্ঞানী তত্ত্বদর্শীদিগের নিকট তাহা অবগত হইবে।
শিষ্য। আপনাকে আমি সেবার দ্বারা পরিতুষ্ট করিয়া প্রণিপাত এবং পরিপ্রশ্নের সহিত জিজ্ঞাসা করিতেছি, আমাকে সেই জ্ঞান দান করুন।
গুরু। তাহা আমি পারি না; কেন না, আমি জ্ঞানীও নহি, তত্ত্বদর্শীও নহি। তবে একটা মোটা সঙ্কেত বলিয়া দিতে পারি।
জ্ঞানের দ্বারা সমুদায় ভূতকে আপনাকে এবং ঈশ্বরে দেখিতে পাওয়া যায়, ইতিবাক্যে কাহার কাহার পরস্পর সম্বন্ধ জ্ঞেয় কথিত হইয়াছে?
শিষ্য। ভূত, আমি, এবং ঈশ্বর।
গুরু। ভূতকে জানিবে কোন্ শাস্ত্রে?
শিষ্য। বহির্ব্বিজ্ঞানে।