কৃষ্ণকান্তের উইল
ব্রহ্মানন্দ যায় কি প্রকারে? ভয় করে–কনস্টেেবল যে গাছতলায়।
মাধবীনাথ বলিলেন, “কোন ভয় নাই, আমি সঙ্গে লোক দিতেছি |” মাধবীনাথের আদেশমত একজন দ্বারবান ব্রহ্মানন্দের সঙ্গে গেল। ব্রহ্মানন্দ রোহিণীর পত্র লইয়া আসিলেন। সেই পত্রে, মাধবীনাথ যাহা যাহা খুঁজিতেছিলেন, সকলই পাইলেন।
পত্র পাঠ করিয়া ব্রহ্মানন্দকে ফিরাইয়া দিয়া বলিলেন, “এ নম্বরের নোট নহে। কোন ভয় নাই–তুমি ঘরে যাও। আমি কনস্টে বলকে বিদায় করিয়া দিতেছি|”
ব্রহ্মানন্দ মৃতদেহে প্রাণ পাইল। উর্ধ্বশ্বাসে তথা হইতে পলায়ন করিল।
মাধবীনাথ কন্যাকে চিকিৎসার্থ স্বগৃহে লইয়া গেলেন। তাহার চিকিৎসার্থ উপযুক্ত চিকিৎসক নিযুক্ত করিয়া দিয়া, স্বয়ং কলিকাতায় চলিলেন। ভ্রমর অনেক আপত্তি করিল, মাধবীনাথ শুনিলেন না। শীঘ্রই আসিতেছি, এই বলিয়া কন্যাকে প্রবোধ দিয়া গেলেন।
কলিকাতায় নিশাকর দাস নামে মাধবীনাথের একজন বড় আত্মীয় ছিলেন। নিশাকর মাধবীনাথের অপেক্ষা আট দশ বৎসরের বয়ঃকনিষ্ঠ। নিশাকর কিছু করেন না–পৈতৃক বিষয় আছে–কেবল একটু একটু গীতবাদ্যের অনুশীলন করেন। নিষ্কর্মা বলিয়া সর্বদা পর্য্যটনে গমন করিয়া থাকেন। মাধবীনাথ তাঁহার কাছে আসিয়া সাক্ষাৎ করিলেন। অন্যান্য কথার পর নিশাকরকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেমন হে, বেড়াইতে যাইবে?”
নিশা। কোথায়?
মা। যশোর।
নি। সেখানে কেন?
মা। নীলকুঠি কিনব।
নি। চল।
তখন বিহিত উদ্যোগ করিয়া দুই বন্ধু এক দিনের মধ্যে যশোরাভিমুখে যাত্রা করিলেন। সেখান হইতে প্রসাদপুর যাইবেন।