কৃষ্ণকান্তের উইল
ভো। তার পর?
গো। তার পর, সে রাজি হইল না।
ভো।ভাল, আমি তাকে একটা পরামর্শ দিতে পারি?
গো। পার, কিন্তু আমি পরামর্শটা শুনিব।
ভো। শোন।
এই বলিয়া ভোমরা “ক্ষীরি! ক্ষীরি!” করিয়া একজন চাকরাণীকে ডাকিল।
তখন ক্ষীরোদা–ওরফে ক্ষীরোদমণি–ওরফে ক্ষীরাব্ধিতনয়া—–ওরফে শুধু ক্ষীরি আসিয়া দাঁড়াইল–মোটাসোটা গাটা গোটা–মল পায়ে–গোট পরা–হাসি চাহনিতে ভরা ভরা। ভোমরা বলিল, “ক্ষীরি,-রোহিণী পোড়ারমুখীর কাছে এখনই একবার যাইতে পারবি?”
ক্ষীরি বলিল, “পারব না কেন? কি বলতে হবে?”
ভোমরা বলিল, “আমার নাম করিয়া বলিয়া আয় যে, তিনি বললেন, তুমি মর|”
“এই? যাই |” বলিয়া ক্ষীরদা ওরফে ক্ষীরি–মল বাজাইয়া চলিল। গমনকালে ভোমরা বলিয়া দিল, “কি বলে, আমায় বলিয়া যাস |”
“আচ্ছা |” বলিয়া ক্ষীরোদা গেল। অল্পকালমধ্যেই ফিরিয়া আসিয়া বলিল, “বলিয়া
আসিয়াছি |”
ভো। সে কি বলিল?
ক্ষীরি। সে বলিল, উপায় বলিয়া দিতে বলিও।
ভো। তবে আবার যা। বলিয়া আয় যে–বারুণী পুকুরে–সন্ধ্যেবেলা কলসী গলায় দিয়ে– বুঝেছিস?”
ক্ষীরি। আচ্ছা।
ক্ষীরি আবার গেল। আবার আসিল। ভোমরা জিজ্ঞাসা করিল, “বারুণী পুকুরের কথা বলেছিস?”
ক্ষীরি। বলিয়াছি।
ভো। সে কি বলিল?
ক্ষীরি। বলিল যে “আচ্ছা |”
গোবিন্দলাল বলিলেন, “ছি ভোমরা!”
ভোমরা বলিল, “ভাবিও না। সে মরিবে না। যে তোমায় দেখিয়া মজিয়াছে–সে কি মরিতে পারে?”