কৃষ্ণকান্তের উইল
কৃ। ইহার মাথা মুড়াইয়া, ঘোল ঢালিয়া, কুলার বাতাস দিয়া গ্রামের বাহির করিয়া দিব। আমার এলেকায় আর না আসিতে পারে।
গোবিন্দলাল আবার রোহিণীর দিকে ফিরিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি বল, রোহিণি?”
রোহিণী বলিল, “ক্ষতি কি!”
গোবিন্দলাল বিস্মিত হইলেন। কিঞ্চিৎ ভাবিয়া কৃষ্ণকান্তকে বলিলেন, “একটা নিবেদন আছে |”
কৃ। কি?
গো। ইহাকে একবার ছাড়িয়া দিন। আমি জামিন হইতেছি–বেলা দশটার সময়ে আনিয়া দিব।
কৃষ্ণকান্ত ভাবিলেন, “বুঝি যা ভাবিতেছি, তাই। বাবাজির কিছু গরজ দেখছি|” প্রকাশ্যে বলিলেন, “কোথায় যাইবে? কেন ছাড়িব?”
গোবিন্দলাল বলিলেন, “আসল কথা কি, জানা নিতান্ত কর্তব্য। এত লোকের সাক্ষাতে আসল কথা এ প্রকাশ করিবে না। ইহাকে একবার অন্দরে লইয়া গিয়া জিজ্ঞাসাবাদ করিব |”
কৃষ্ণকান্ত ভাবিলেন, “ওর গোষ্ঠীর মুণ্ডু কর্বে। এ কালের ছেলেপুলে বড় বেহায়া হয়ে উঠেছে। রহ ছুঁচো! আমিও তোর উপর এক চাল চালিব |” এই ভাবিয়া কৃষ্ণকান্ত বলিলেন, “বেশ ত |” বলিয়া কৃষ্ণকান্ত একজন নগ্দীকে বলিলেন, “ও রে! একে সঙ্গে করিয়া, একজন চাকরাণী দিয়া, মেজ বৌমার কাছে পাঠিয়ে দে ত, দেখিস, যেন পালায় না |”
নগ্দী রোহিণীকে লইয়া গেল। গোবিন্দলাল প্রস্থান করিলেন, কৃষ্ণকান্ত ভাবিলেন, “দুর্গা! দুর্গা! ছেলেগুলো হলো কি?”