রাণা। আমরা এক শত যোদ্ধা, এক শত ঘোড়া। আর ঘোড়া নাই যে, তোমায় দিই। অন্য কাহারও ঘোড়া দিতে পারিব না, আমার ঘোড়া লইতে পার।

মা। তাহা প্রাণ থাকিতে লইব না। আমাকে প্রয়োজনীয় হাতিয়ার দিন।

রাণা। কোথায় পাইব? যাহা আছে, তাহাতে আমাদের কুলায় না। কাহাকে নিরস্ত্র করিয়া তোমাকে হাতিয়ার দিব? আমার হাতিয়ার লইতে পার।

মা। তাহা হইতে পারে না। আমকে পোষাক দিতে আজ্ঞা হউক।

রাণা। এখানে যাহা পরিয়া আসিয়াছি, তাহা ভিন্ন আর পোষাক নাই। আমি কিছুই দিব না।

মা। মহারাজ! তবে অনুমতি দিউন, আমি যে প্রকারে হউক, এ সকল সংগ্রহ করিয়া লই।

রাণা হাসিলেন। বলিলেন, “চুরি করিবে?”

মাণিকলাল জিহ্বা কাটিল। বলিল, “আমি শপথ করিয়াছি যে, আর সে কার্যক করিব না |”

রাণা। তবে কি করিবে?

মা। ঠকাইয়া লইব।

রাণা হাসিলেন। বলিলেন, “যুদ্ধকালে সকলেই চোর–সকলেই বঞ্চক। আমিও বাদশাহের বেগম চুরি করিতে আসিয়াছি–চোরের মত লুকাইয়া আছি। তুমি যে প্রকারে পার, এ সকল সংগ্রহ করিও |”

মাণিকলাল প্রফুল্লচিত্তে প্রণাম করিয়া বিদায় লইল।