হাসিয়া রূপসী      নামাইল অসি,
বলে মহারাজ, এ বড় রস।
পৃথিবীপতির বাড়িল যশ ||
দুলায়ে কুণ্ডল,     অধরে অঞ্চল,
হাসে খল খল, ঈষৎ হেলে।
বলে মহাবীর,     এই বলে তুমি
রমণীরে বল করিতে এলে?
পৃথিবীতে যারে,   তুমি দাও প্রাণ,
সেই প্রাণে বাঁচে, বল হে সবে।
আজি পৃথ্বিনাথ     আমার চরণে
প্রাণ ভিক্ষা লও, বাঁচিবে তবে ||
যোড়ো হাত দুটো,         দাঁতে কর কুটো
করহ শপথ ভারতপ্রভু।
শপথ করহ        হিন্দুললনার
হেন অপমান না হবে কভু ||
তুমি না করিবে,        রাজ্যেতে না দিবে
হইতে কখন এ হেন দোষ।
হিন্দুললনারে         যে দিবে লাঞ্ছনা
তাহার উপরে করিবে রোষ ||
শপথ করিল,      পরশিয়ে অসি,
নারী আজ্ঞামত ভারপ্রভু।
আমার রাজ্যতে               হিন্দুললনার
হেন অপমান না হবে কভু ||
বলে শুনি ধনি                  হইয়াছি প্রীত
দেখিয়া তোমার সাহস বল।
যাহা ইচ্ছা তব                 মাগি লও সতি,
পূরাব বাসনা, ছাড়িয়া ছল ||
এই তরবারি             দিনু হে তোমারে
হীরক-খচিত ইহার কোষ।
বীরবালা তুমি               তোমার সে যোগ্য
না রাখিও  মনে আমার দোষ ||
আজি হতে তোমা             ভগিনী বলিনু,
ভাই তব আমি ভাবিও মনে।
যা থাকে বাসনা                মাগি লও বর
যা চাহিবে তাই দেব এখান ||
তুষ্ট হয়ে সতী                  বলে ভাই তুমি
সম্প্রীত হইনু তোমার ভাষে।
ভিক্ষা যদি দিবা                দেখাইয়া দাও
নির্গমের পথ, যাইব বাসে ||
দেখাইল পথ                 আপনি রাজন্
বাহিরিল সতী, সে পুরী হতে।
সবে বল জয়,          হিন্দুকন্যা জয়,
হিন্দুমতি থাক্ ধর্ম্মের পথে ||