আকবর শাহের খোষ রোজ
রাজপুরী মাঝে           কি সুন্দর আজি।
বসেছে বাজার, রসের ঠাট,
রমণীতে বেচে           রমণীতে কিনে
লেগেছে রমণীরূপের হাট ||
বিশালা সে পুরী           নবমীর চাঁদ,
লাখে লাখে দীপ উজলি জ্বলে।
দোকানে দোকানে         কুলবালাগণে
খরিদদার ডাকে, হাসিয়া ছলে ||
ফুলের তোরণ,           ফুল আবরণ
ফুলের স্তম্ভেতে ফুলের মালা।
ফুলের দোকান,           ফুলের নিসান,
ফুলের বিছানা ফুলের ডালা ||
লহরে লহরে             ছুটিছে গোলাব,
উঠিছে ফুয়ারা জ্বলিছে জল।
তাধিনি তাধিনি          নাচিতেছে নটী,
গায়িছে মধুর গায়িকা দল ||
রাজপুরী মাঝে          লেগেছে বাজার,
বড় গুলজার সরস ঠাট।
রমণীতে বেচে         রমণীতে কিনে
লেগেছে রমণীরূপের হাট ||
কত বা সুন্দরী,        রাজার দুলালী
ওমরাহজায়া, আমীরজাদী।
নয়নেতে জ্বালা,        অধরেতে হাসি,
অঙ্গেতে ভূষণ মধুর-নাদী ||
হীরা মতি চুণি                  বসন ভূষণ
কেহ বা বেচিছে কেনে বা কেউ।
কেহ বেচে কথা               নয়ন ঠারিয়ে
কেহ কিনে হাসি রসের ঢেউ ||
কেহ বলে সখি                এ রতন বেচি
হেন মহাজন এখানে কই?
সুপুরুষ পেলে                আপনা বেচিয়ে
বিনামূল্যে কেনা হইয়া রই ||
কেহ বলে সখি               পুরুষ দরিদ্র
কি দিয়ে কিনিবে রমণীমণি।
চারি কড়া দিয়ে               পুরুষ কিনিয়ে
গৃহেতে বাঁধয়ে রেখ লো ধনি ||
পিঞ্জরেতে পুরি,              খেতে দিও ছোলা,
সোহাগ শিকলি বাঁধিও পায়।
অবোধ বিহঙ্গ                পড়িবে আটক
তালি দিয়ে ধনি, নাচায়ো তায় ||