অসম্পূর্ণ রচনা
(কলার শয়ন)
কলা। বিশ্বাস সম্পূর্ণ। আমি আগেই বলিয়াছিলাম যে গেলে তাঁকে আটক করিবে। নিশি! এখন আমার দশা কি হইবে! (রোদন)
নিশা। কাঁদিলে কি হবে মা। আমাদের সকলেরই ত এক দশা হইবে। আমরাও নিরাশ্রয় হইলাম-এখন মুসলমানের হাতে জাতি মান প্রাণ সব যাবে।
কলা। কি বলিলি সবার এক দশা? তোদের যে রাজা মাত্র-আমার যে স্বামী। তুই কি জানিস স্বামী কি ধন!
নিশা। তা বটে। রাজ্য যায় তবু প্রাণটা থাকিলে আমরা বজায় থাকিব। ভাল মা, এক কাজ কর না কেন? রাজার কাছে কেন লোক পাঠাও না যে সুবাদারকে রাজ্য ছাড়িয়া দিয়া আসুন-আমরা না হয় তাঁকে গহনা পত্র বিক্রয় করিয়া খাওয়াইব। কাঁদ কেন মা এ কথায়?
কলা। তুই কেন আমায় অপমান করিস্? কি! আমার স্বামীকে আমি রাজ্যত্যাগ করিয়া প্রাণ বাঁচাইতে বলিব! নিশা-তোদের ভয় হইয়া থাকে তোরা চলিয়া যা-আমার স্বামী রাজা-তিনি রাজার কাজ করিবেন।-কিসের গোল ঐ?
[নেপথ্যে বহু লোক “জয় মা কলাবতীর জয়”]
আজিকার দিনে কে বলে কলাবতীর জয়?
(দিবার প্রবেশ)
দিবা। মহারাণী! নগরের সকল প্রজা আসিয়া রাজবাড়ী ঘেরিল।
কলা। কি হয়েছে?
দিবা। সকলে বলিতেছে ঢাকার সুবাদার রাজাকে কয়েদ করিয়াছে।
কলা। তার পর প্রজারা কি বলে। [নেপথ্যে “মহারাণী কলাবতীর জয়”] ওরা কি চায় দিবা?
দিবা। আপনি স্বকর্ণে শুনুন।
কলা। প্রজারা আমার পুত্র, আমার [নিকট] অবারিতদ্বার। প্রধানদিগকে আমার কাছে ডাকিয়া আন।
(দিবার প্রস্থান। কতিপয় নগরবাসীর সহিত পুনঃপ্রবেশ)
প্রজাবর্গ। জয় কলাবতীর জয়।
কলা। কি চাও বাবা তোমরা?
১ম প্রজা। মা, আমাদের রাজা কোথায়?
২য় প্রজা। মা, আমাদের রাজাকে নাকি দুষ্ট যবন কয়েদ করিয়াছে? মা, আমাদের বাহুতে কি বল নাই যে বাপের উদ্ধার করি? -বঙ্কিম-কণিকা, পৃ,১- ২২।