ত্রিপদী
এ কি বিপরীত ভাব,     হোলে বর্ষা আবির্ভাব
সতত চপলা চমকায়,
তোমার অধরে আর,         হাস্যকার চপলার
চমক নাহিক হায় হায়।
পয়ার
দ্বিগুণ বাড়ায় মান যত পতি সাধে,
ফলতঃ বাহিরে সেটা সাধে বাদ সাধে।
পরে নিজ গাঢ় মান জানাবার তরে,
ঘর ছেড়ে ছলেতে বাহিরে যাত্রা করে।
মধুভাষে বঁধূ কহে কি কর ললনা,
যেও না যেও না ধনি, বাহিরে যেও না।
ত্রিপদী
প্রণয়িনী মান পালা,         ঘোর কাল মেঘমালা
ঝালাপালা করিল আমারে;
শত ফিরে ফিরে চাও,      মাথা খাও ঘরে যাও
দোহাই দোহাই বারে বারে।
দুরন্ত অবোধ মন,          ঢাকিতেছে ঘন ঘন
গগন শোভন শশধরে;
কি জানি যদ্যপি পুন,       প্রকাশিয়া নিজগুণ
তবু মুখশশী গ্রাস করে।
তাহা হ’লে আর প্রাণ,     আমার চকোর প্রাণ
রহিবে না শরীর-পিঞ্জরে;
তাই বলি প্রাণপ্রিয়ে,       বাঁচাও ঘরেতে গিয়ে
এসো এসো ধরি দুই করে।
পয়ার
নিবিড় নীরদ নব নিরখি নয়নে,
বাহিরেতে গিয়া ধনি ভাবিতেছে মনে।
ঘন ঘন ঘননাদ, গভীরা যামিনী,
পলকে পলকে তার নলকে দামিনী।
মানে মানে মান হরি মানিনী ভামিনী,
গরবেতে গৃহে যায় গজেন্দ্রগামিনী।
মানের নিগূঢ় ভাব শেষে গেল বোঝা,
সুখেতে বঙ্কিমচন্দ্র হইলেন সোজা।
-‘সাহিত্য’, শ্রাবণ, ১৩০১