বর্ষার মানভঞ্জন
নায়কের উক্তি
ত্রিপদী
বিধুমুখি করে মান,        কিরূপে দেখালে প্রাণ
হেরিতেছি অপরূপ ভাব।
বরষার আবির্ভাবে,         প্রফুল্ল সরস ভাবে,
রহিয়াছে সকল স্বভাব।
বন উপবন চয়,               রসময় সমুদয়
রসপূর্ণ যত জীবগণ।
কিন্তু কি আশ্চর্য্য কর,     এ সবার মাঝে তব
কেন প্রিয়ে বিরস বদন।
বুঝেছি কারণ তার,      দোষ দিব কি তোমার
বরষাকালেতে সব করে;
সুধাকর এই কালে,       জড়িত জলদ জালে
স্বভাবে মলিন ভাব ধরে।
গগনের শশধরে          যদি এই ভাব ধরে
শোভাহীন হয়ে সদা রয়;
তব মুখচন্দ্র তার,        কেন বল নাহি হবে
সেরূপ বিরূপ অতিশয়।
আকাশেতে জলধর,       মনোহর নিশাকর
ঢাকি আছে দিবস যামিনী;
কেন না তোমার তবে,   শশীমুখ ঢাকা রবে
অম্বরে অম্বরে বিনোদিনী।
মান ভাঙ্গিবার তরে,     ধরিলাম দুই করে
মুখ-পদ্মে কর পদ্ম দিলে;
বুঝি এই ভাব তার,       আগমনে বরষার
কমলিনী মুদিতা সলিলে।
এ কালের প্রতিকূল,      কাননে কোকিলকুল
কুহু কুহু কাকলি না করে।
কোকিল বাদিনী বুঝি,   তাই আছে মুখ বুজি
মৌনবতী বরষার ডরে।
গগনের যত তারা,       বরষা কালেতে তারা
সদা কাল নহে প্রকটিত;
তাই বুঝি জ্যোতিহারা,     তোমার নয়ন তারা।
অভিমানে রোয়েছে মুদিত।
বরষার অনুক্ষণ,            বারিধারা বরিষণ ||
বারে বারে ধরা পূর্ণ তায়;
তাই বুঝি নিরন্তর,          তব নেত্র নীর ধর ||
নীর-ধারে ফেলিছে ধরায়।