সপ্তম পরিচ্ছেদ—পাণ্ডবদিগের ঐতিহাসিকতা

পাণিনি সূত্র করিয়াছেন,—

মহান্ ব্রীহ্যপরাহ্নগৃষ্টীষ্বাসজাবালভারভারতহৈলিহিলরৌররবপ্রবৃদ্বেষু।   ৬।   ২।   ৩৮

অর্থাৎ ব্রীহি ইত্যাদি শব্দের পূর্বে মহৎ শব্দ প্রযুক্ত হয়। তাহার মধ্যে একটি শব্দ ‘ভারত’। অতএব পাণিনিতে মহাভারত শব্দ পাওয়া গেল। প্রসিদ্ধ ইতিহাসগ্রন্থ ভিন্ন আর কোন বস্তু “মহাভারত” নামে কখনও অভিহিত হইয়াছিল, এমন প্রমাণ নাই। Weber সাহেব বলেন, এখানে মহাভারত অর্থে ভরতবংশ। এটি কেবল তাঁহার গায়ের জোর। এমন প্রয়োগ কোথাও নাই।

পুনশ্চ, পাণিনিসূত্র—

                    “গবিযুধিভ্যাং স্থির।”“গবিযুধিভ্যাং স্থির।”   ৮।  ৩।  ৯৫

গবি ও যুধি শব্দের পর স্থির শব্দের স স্থানে ষ হয়। যথা—গবিষ্ঠিরঃ, যুধিষ্ঠিরঃ।

পুনশ্চ,—

                    “বহ্বচ ইজঃ প্রাচ্যভরতেষু।”   ২।   ৪।   ৬৬

ভরতগোত্রের উদাহরণ “যুধিষ্ঠিরাঃ।”*

পুনশ্চ,—

      “স্ত্রিয়ামবন্তিকুন্তিকুরুভ্যশ্চ।”  ৪।  ১।  ১৭৬

পাওয়া গেল “কুন্তি”।

পুনশ্চ,—

                    পুনশ্চ,— “বাসুদেবার্জুনাভ্যাং বুন্।”   ৪।   ৩।   ৯৮

অর্থাৎ বাসুদেব ও অর্জুন শব্দের পর ষষ্ঠ্যর্থে বুন্ হয়।

পুনশ্চ,—

“নভ্রাণ্‌নপান্নবেদানাসত্যানমুচিনকুলনখনপুংসকনক্ষত্রনক্রনাকেষু।”       ৬।  ৩।  ৭৫

ইহাতে “নকুল” পাওয়া গেল।

                    দ্রোণপর্বতজীবন্তাদন্যতরতরস্যাম্।   ৪।   ‍১।   ১০৩

“দ্রোণায়ন” শব্দ পাওয়া গেল। ইহাতে অশ্বত্থামা ভিন্ন আর কিছুই বুঝায় না। এইরূপ পাঁচটি পাণ্ডবের নামেই এবং কুন্তী, দ্রোণ, অশ্বত্থামা প্রভৃতির নাম পাণিনিসূত্রে পাওয়া যায়।

যদি মহাভারত গ্রন্থের নাম এবং সেই গ্রন্থের নায়কদিগের নাম পাওয়া গেল, তবে পাণিনির সময়েও মহাভারত পাণ্ডবদিগের ইতিহাস। এখন দেখিতে হইবে, পাণিনি কবেকার লোক।

* উদাহরণটি সিদ্ধান্তকৌমুদীর, ইহা বলা কর্তব্য।