দ্বিতীয় সংখ্যা-ধর্ম্ম-শিক্ষা
I. THEORY.

“পড় বাবা, মাতৃবৎ পরদারেষু |”

ছেলে। সে কাকে বলে, বাবা?

বাপ। এই যত স্ত্রীলোক পরের স্ত্রী, সবাইকে আপনার মা মনে করিতে হয়।

ছেলে। তারা সবাই আমার মা?

বাপ। হাঁ বাবা, তা বৈ কি।

ছেলে। বাবা, তবে তোমার বড় জ্বালা হলো। আমার মা হ’লে তারা তোমার কে হ’লো, বাবা?

বাপ। ছি! ছি! ছি‌! অমন কথা কি বল্‌তে আছে! পড়, “মাতৃবৎ পরদারেষু পরদ্রব্যেষু লোষ্ট্রবৎ |”

ছেলে। অর্থ কি হলো, বাবা?

বাপ। পরের সামগ্রীকে লোষ্ট্রের মত দেখ্‌বে।

ছেলে। লোষ্ট্র কি?

বাপ। মাটির ঢেলা।

ছেলে। বাবা, তবে ময়রা বেটাকে আর সন্দেশের দাম না দিলেও হয়-মাটির ঢেলার আর দাম কি?

বাপ। তা নয়। পরের সামগ্রী মাটির মত দেখ্‌বে-নিতে যেন ইচ্ছা না হয়।

ছেলে। বাবা, কুমারের ব্যবসা শিখ্‌লে হয় না?

বাপ। ছি বাবা! তোমার কিছু হবে না দেখ্‌ছি। এখন পড়, “মাতৃবৎ পরদারেষু পরদ্রব্যেষু লোষ্ট্রবৎ। আত্মবৎ সর্ব্বভূতেষু যঃ পশ্যতি স পণ্ডিতঃ||”

ছেলে। আত্মবৎ সর্ব্বভূতেষু কি, বাবা?

বাপ। এই আপনার মত সকলকেই দেখ্‌বে।

ছেলে। তা হলেই ত হলো। যদি পরকে আপনার মত ভাবি, তা হ’লে পরের সামগ্রীকে আপনারই সামগ্রী ভাব্‌তে হবে, আর পরের স্ত্রীকেও আপনার স্ত্রী ভাব্‌তে হবে।

বাপ। দূর হ! পাজি বেটা, ছুঁচো বেটা। (ইতি চপেটাঘাত)

II. PRACTICE.
(১)

কাদম্বিনী নামে কোন প্রৌঢ়া কলসীকক্ষে জল আনিতে যাইতেছে। তখন অধীতশাস্ত্র সেই বালক, তাহার সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত।

ছেলে। বলি, মা!

কাদম্বিনী । কেন, বাছা! আহা, ছেলেটির কি মিষ্ট কথা গো! শুনে কাণ জুড়ায়।

ছেলে। মা, সন্দেশ খেতে একটি পয়সা দে না মা!

কাদম্বিনী । বাবা, আমি দুঃখী মানুষ, পয়সা কোথা পাব, বাবা?

ছেলে। দিবিনে বেটি? মুখপুড়ি! হতভাগি! আঁটকুড়ি!

কাদম্বিনী । আ মলো! কাদের এমন পোড়ারমুখো ছেলে!