হাকিম । তোমার বাপের নাম কি?

সাহেব। বাপের নামে কোটের কি কাম আছে?

হাকিম । বলি সেটা জানা আছে কি?

সাহেব। হামার বাপ বড় আদমি ছেলো-লেকেন লামটা এখন মনে পড়্‌ছে না।

হাকিম । মনে কর না হয়। তোমার নামটা কি?

সাহেব। আমার নাম জান সাহেব-জান ডিক্‌সন্।

হাকিম । বাপের নাম ডিক্‌সন্ নয়?

সাহেব। হোবে-ডিক্‌সন্ হোতে পারে-লেকেন-

বাদীর মোক্তার এই সময়ে বলিল, “হুঁজুর, ওর বাপের নাম গোবর্দ্ধ্বন সাহেব |”

সাহেব রাগ করিয়া বলিল, “গোবর্দ্ধ্বন হইলো ত কি হইলো-তোমার বাপের নাম যে রামকান্ত-তোমার বাপ চূড়া বেচিত-আমার বাপ বড় আদমি ছেলো |”

হাকিম । তোমার বাপ কি করিত?

সাহেব। বড় লোকের সাদি দিত।

হাকিম । সে আবার কি? ঘটকালি করিত না কি?

মোক্তার। আজ্ঞে না-বিবাহের বাজনার জয়ঢাক ঘাড়ে করিত।

অনেকে হাসিল। হাকিম জুরিস্‌ডিক্‌সনের আপত্তি নামঞ্জুর করিয়া বিচারে প্রবৃত্ত হইলেন। ফরিয়াদীকে তলব করায় রূপার পৈছা হাতে নধর কালো কোলো একজন স্ত্রীলোক উপস্থিত হইল। তাহাকে যেরূপ জিজ্ঞাসাবাদ করা হইল, আর সে যেরূপ উত্তর দিল, নিম্নে লিখিতেছি;-

প্রশ্ন-তোমার নাম কি?

উত্তর-রঙ্গিণী জেলেনী।

প্রশ্ন। তুমি কি কর?

উত্তর। বিল খালে মাছ ধরে বেচি।

আসামী সাহেব কহিল, “ঝুটা বাত! ও সুঁটকি মাছ বেচে |”

জেলেনী বলিল, “তাও বেচি। তাহাতেই ত তুমি মরেছ |”

প্রশ্ন। তোমার কিসের নালিশ?

উত্তর। চুরির নালিশ।

প্রশ্ন। কে চুরি করেছে?

উত্তর। (সাহেবকে দেখাইয়া) এই বাগদীর ছেলে।

সাহেব। মুই সাহেব আছে-মুই বাগদী লই।