লোকরহস্য
আমাদের দেশের কামিনীগণ যে দেশহিতৈষিণী নন-নহিলে ভিস্তীর প্রয়োজন হইত না। তাঁহারা যদি প্রাত্যহিক সাংসারিক কান্নাটা মাঠে গিয়া কাঁদিয়া আসেন, তাহা হইলে অনায়াসেই কৃষিকার্য্যের সুবিধা হয় ও মেঘ ডিপার্টমেণ্ট এবালিশ করা যাইতে পারে। তবে আমরা লোকের শারীরিক ও মানসিক মঙ্গলার্থ বলি যে, আকাশবৃষ্টির পরিবর্ত্তে নারীনয়নাশ্রুর আদেশ করিতে গেলে, একটু পাকা রকম পুলিশের বন্দোবস্ত করা চাই। মেঘের বিদ্যুতে অধিক প্রাণী নাশ হয় না; কিন্তু রমণীনয়নমেঘের কটাক্ষ-বিদ্যুতে, মাঠের মাঝখানে, চাষা-ভূষোর ছেলেদের কি হয় বলা যায় না-পুলিশ থাকা ভাল।
শুনিলাম, শিক্ষাবিভাগে বড় গোলযোগ উপস্থিত হইয়াছে। শুনিয়াছি, অনেক বিদ্যালয়ের ছাত্রেরা এক একটা কাণমাপা কাটি প্রস্তুত করিয়াছে। তাহাদের মনে ঘোর সন্দেহ উপস্থিত হইয়াছে-তাহারা বলে, অধ্যাপকদিগের শ্রবণেন্দ্রিয়গুলি মাপিয়া দেখিব-নহিলে তাঁহাদিগের নিকট পড়িব না। আমরা ভরসা করি, মাপকাটি ছোট পড়িবে, এমত সম্ভাবনা কোথাও নাই।
যাহা হউক, দুর্বৎসর হউক, সুবৎসর হউক, তিনটি নিগূঢ় তত্ত্ব আমরা স্থির জানিতে পারিতেছি-তদ্বিষয়ে কোন সংশয় নাই।
প্রথম, বৎসরটি চলিয়া গিয়াছে। এ বিষয়ে মতান্তর নাই।
দ্বিতীয়, বৎসর গিয়াছে, আর ফিরিবে না। ফিরাইবার জন্য কেহ কোন উদ্যোগ পাইবেন না। নিষ্ফল হইবে।
তৃতীয়, ফিরে আর না ফিরে, পাঠক! আপনার ও আমার পক্ষে সমান কথা, কেন না, আপনার ও আমার পঁচাত্তরেও ঘাস জল, ছিয়াত্তরেও ঘাস জল। আপনার মঙ্গল হউক, আপনি ঘাস জলের প্রতি দৃষ্টি রাখিবেন।