কৃষ্ণকান্ত বলিলেন, “দেরাজ খুলিয়া আমার উইল বাহির কর |”

গোবিন্দলাল দেরাজ খুলিয়া উইল বাহির করিলেন।

কৃষ্ণকান্ত বলিলেন, “আমার মামলা মুহুরি ও দশ জন গ্রামস্থ ভদ্রলোক ডাকাও|”

তখনই নায়েব মুহুরি কারকুনে, চট্টোপাধ্যায় মুখোপাধ্যায় বন্দোপাধ্যায় ভট্টাচার্য্যে, ঘোষ বসু মিত্র দত্তে ঘর পুরিয়া গেল।

কৃষ্ণকান্ত একজন মুহুরিকে আজ্ঞা করিলেন, “আমার উইল পড় |”

মুহুরি পড়িয়া সমাপ্ত করিল।

কৃষ্ণকান্ত বলিলেন, “ও উইল ছিঁড়িয়া ফেলিতে হইবে। নূতন উইল লেখ |”

মহুরি জিজ্ঞাসা করিল, “কিরূপে লিখিব?”

কৃষ্ণকান্ত বলিলেন, “যেমন আছে সব সেইরূপ, কেবল___”

“কেবল কি?”

“কেবল গোবিন্দলালের নাম কাটিয়া দিয়া, তাহার স্থানে আমার ভ্রাতুষ্পুত্রবধূ ভ্রমরের নাম লেখ। ভ্রমরের অবর্ত্তমানাবস্থায় গোবিন্দলাল ঐ অর্ধাংশ পাইবে লেখ |”

সকলে নিস্তব্ধ হইয়া রহিল। কেহ কোন কথা কহিল না। মুহুরি গোবিন্দলালের মুখপানে চাহিল। গোবিন্দলাল ইঙ্গিত করিলেন, লেখ।

মুহুরি লিখিতে আরম্ভ করিল। লেখা সমাপন হইলে কৃষ্ণকান্ত স্বাক্ষর করিলেন। সাক্ষিগণ স্বাক্ষর করিল। গোবিন্দলাল আপনি উপযাচক হইয়া, উইলখানি লইয়া তাহাতে সাক্ষী স্বরূপ স্বাক্ষর করিলেন।

উইলে গোবিন্দলালের এক কপর্দকও নাই–ভ্রমরের অর্দ্ধাংশ।

সেই রাত্রে হরিনাম করিতে করিতে তুলসীতলায় কৃষ্ণকান্ত পরলোক গমন করিলেন।