ন। তুই আমায় যা ইচ্ছা তাই বলিবি কেন?

সা। তা ভাই, কি জিজ্ঞাসা করবে, না বুঝাইয়া বলিলে কেমন করিয়া উত্তর দিই?

ন। বলি, গিন্নীর না কি আর একটি বউ এয়েছে?

সা। কে বউ?

ন। সেই মুচি বউ।

সা। মুচি? কই, শুনি নে ত।

ন। মুচি, না হয় বাগদী?

সা। তাও শুনি নে।

ন। শোন নি–আমাদের একজন বাগদী সতীন আছে।

সা। কই? না।

ন। তুই বড় দুষ্ট। সেই যে, প্রথম যে বিয়ে।

সা। সে ত বামনের মেয়ে।

ন। হ্যাঁ, বামনের মেয়ে! তা হলে আর নিয়ে ঘর করে না?

সা। কাল যদি তোমায় বিদায় দিয়ে, আমায় নিয়ে ঘর করে, তুমি কি বাগদীর মেয়ে হবে?

ন। তুই আমায় গাল দিবি কেন লা, পোড়ারমুখী?

সা। তুই আর এক জনকে গাল দিচ্ছিস কেন লা, পোড়ারমুখী?

ন। মরগে যা–আমি ঠাকুরুণকে গিয়া বলিয়া দিই, তুই বড় মানুষের মেয়ে বলে আমায় যা ইচ্ছে তাই বলিস।

এই বলিয়া নয়নতারা ওরফে কালপেঁচা ঝমর ঝমর করিয়া ফিরিয়া যায়–তখন সাগর দেখিল প্রমাদ! ডাকিল, “না দিদি, ফের ফের। ঘাট হয়েছে, দিদি ফের! এই দোর খুলিতেছি।”

নয়নতারা রাগিয়াছিল–ফিরিবার বড় মত ছিল না। কিন্তু ঘরের ভিতর দ্বার দিয়া সাগর কত সন্দেশ খাইতেছে, ইহা দেখিবার একটু ইচ্ছা ছিল, তাই ফিরিল। ঘরের ভিতর প্রবেশ করিয়া দেখিল–সন্দেশ নহে–আর একজন লোক আছে। জিজ্ঞাসা করিল, “এ আবার কে?”

সা। প্রফুল্ল।

ন। সে আবার কে?

সা। মুচি বৌ।

ন। এই সুন্দর?

সা। তোমার চেয়ে নয়।

ন। নে, আর জ্বালাস নে। তোর চেয়ে ত নয়।