রাজকুমার অন্ত:করণে চিন্তিত হইলেন। গড় মান্দারণে ছিল? তবে এ ব্যক্তি কি তিলোত্তমার কোন সংবাদ বলিতে পারিবে না?

এই চিন্তায় ব্যাকুল হইয়া কহিলেন, “মহাশয়, উহার নাম কি?”

ওসমান চিন্তা করিয়া কহিলেন, “উহার নামটি কিছু কঠিন, হঠাৎ স্মরণ হয় না, গনপত? না; গনপত–গজপত–না; গজপত কি?

“গজপত? গজপত এদেশীয় নাম নহে, অথচ দেখিতেছি, ও ব্যক্তি বাঙ্গালি?”

“বাঙ্গালি বটে, ভট্টাচার্য। উহার একটা উপাধি আছে, এলেম্ – এলেম্ কি?

“মহাশয়! বাঙ্গালির উপাধিতে ‘এলেম্’ শব্দ ব্যবহার হয় না। এলেম্‌কে বাঙ্গালায় বিদ্যা কহে। বিদ্যাভূষণ বা বিদ্যাবাগীশ হইবে |”

হাঁ হাঁ বিদ্যা কি একটা, – রসুন, বাঙ্গালায় হস্তীকে কি বলে বলুন দেখি?”

“হস্তী |”

“আর?”

“করী, দন্তী, বারণ, নাগ, গজ___”

“হাঁ হাঁ, স্মরণ হইয়াছে; উহার নাম ‘গজপতি বিদ্যাদিগ্‌গজ’।”

“বিদ্যাদিগ্গকজ! চমৎকার উপাধি! যেমন নাম, তেমনই উপাধি। উহার সহিত আলাপ করিতে বড় কৌতূহল জন্মিতেছে।

ওসমান খাঁ একটু একটু গজপতির কথাবার্তা শুনিয়াছিলেন; বিবেচনা করিলেন, ইহার সহিত কথোপকথনের ক্ষতি হইতে পারে না। কহিলেন, “ক্ষতি কি?”

উভয়ে নিকটস্থ বাহিরের ঘরে গিয়া ভৃত্যদ্বারা গজপতিকে আহ্বান করিয়া আনিলেন।