বিষবৃক্ষ
সু। বিশেষ তোমার। আজি জ্বর জানিতে পারিয়াছিলে?
দে। না।
সু। আর যকৃতের সেই ব্যথাটা?
দে। পূর্বমত আছে।
সু। তবে এখন এ সব স্থগিত রাখিলে ভাল হয় না?
দে। কি–মদ খাওয়া? কত দিন বলিবে? ও আমার সাথের সাথী।
সু। সাথের সাথী কেন? সঙ্গে আসে নাই–সঙ্গেও যাইবে না। অনেকে ত্যাগ করিয়াছে– তুমিও ত্যাগ করিবে না কেন?
দে। আমি কি সুখের জন্য ত্যাগ করিব? যাহারা ত্যাগ করে, তাহাদের অন্য সুখ আছে– সেই ভরসায় ত্যাগ করে। আমার আর কোন সুখই নাই।
সু। তবু, বাঁচিবার আশায়, প্রাণের আকাঙ্ক্ষায় ত্যাগ কর।
দে। যাহাদের বাঁচিয়া সুখ, তাহারা বাঁচিবার আশায় মদ ছাড়ুক। আমার বাঁচিয়া কি লাভ?-
সুরেন্দ্রের চক্ষু বাষ্পাকুল হইল। তখন বন্ধুস্নেহে পরিপূর্ণ হইয়া কহিলেন, “তবে আমাদের অনুরোধে ত্যাগ কর |”
দেবেন্দ্রের চক্ষে জল আসিল। দেবেন্দ্র বলিল, “আমাকে যে সৎপথে যাইতে অনুরোধ করে, তুমি ভিন্ন এমন আর কেহ নাই। যদি কখন আমি ত্যাগ করি, সে তোমারই অনুরোধে করিব। আর___”
সু। আর কি?
দে। আর যদি কখন আমার স্ত্রীর মৃত্যুসংবাদ কর্ণে শুনি–তবে মদ ছাড়িব। নচেৎ এখন মরি বাঁচি সমান কথা।
সুরেন্দ্র সজলনয়নে, মনোমধ্যে হৈমবতীকে শত শত গালাগালি দিতে দিতে গৃহে প্রত্যাগমন করিলেন।