রাজসিংহ
এই আশ্চর্য উত্তরের অর্থ কি, তাহা চঞ্চল ও নির্মল কিছুই স্থির করিতে পারিল না। পরিশেষে তাহারা বিচারে স্থির করিল যে, যখন ফৌজের কথা আছে, তখন রাণাকে, অবগত করা আবশ্যক। নির্মলকুমারী মানিকলালের নিকট সংবাদ পাঠাইয়া দিল।
রাণাও সেইরূপ গোলযোগে পড়িয়াছিলেন। চঞ্চলকুমারীকে ভুলেন নাই। তিনি বিক্রম সোলঙ্কিকে পত্র লিখিয়াছিলেন। পত্রের মর্ম, চঞ্চলকুমারীর বিবাহের কথা। বিক্রম সিংহ কন্যাকে শাপ দিয়াছিলেন, রাণা তাহা স্মরণ করাইয়া দিলেন। আর তিনি যে অঙ্গীকার করিয়াছিলেন যে, তিনি কখন রাজসিংহকে উপযুক্ত পত্র বিবেচনা করিবেন, তখন তাঁহাকে আশীর্বাদের সহিত কন্যা সম্প্রদান করিবেন, তাহাও স্মরণ করাইলেন। রাণা জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখন আপনার কিরূপ অভিপ্রায়?”
এই উত্তরে বিক্রম সিংহ লিখিলেন, “আমি দুই হাজার অশ্বারোহী লইয়া আপনার নিকট যাইতেছি। ঘাট ছাড়িয়া দিবেন |”
রাজসিংহ, চঞ্চলকুমারীর মত সমস্যা বুঝিতে পারিলেন না। ভাবিলেন, “দুই হাজার মাত্র অশ্বারোহী লইয়া বিক্রম আমার কি করিবে? আমি সতর্ক আছি |” অতএব তিনি বিক্রমকে ঘাট ছাড়িয়া দিবার আদেশ প্রচার করিলেন।