রাধারাণী
দে। তবে তিনি কেন সেই শুভলগ্নযুক্ত সুতহিবুক যোগটা খুঁজুন না?
রা। বোধ করি, এতক্ষণ সে কাজটা হইয়া গেল। তোমার সঙ্গে রাধারাণীর এরূপ সাক্ষাৎ অন্য কোন কারণে হইতে পারে না, এ পুরীতে সকলেই জানে। সংবাদ লইব কি?
দে। বিলম্বে কাজ কি?
রাধারাণী ডাকিল, “চিত্রে!” চিত্রা আসিল। রাধারাণী জিজ্ঞাসা করিল, “দিনটিন কিছু হইল কি?”
চিত্রা বলিল, “হাঁ, দেওয়ানজি মহাশয় পুরোহিত মহাশয়কে ডাকাইয়াছিলেন। পুরোহিত পরদিন বিবাহের উত্তম দিন বলিয়া গিয়াছেন। দেওয়ানজি মহাশয় সমস্ত উদ্যোগ করিতেছেন |”
তখন বসন্ত আসিল, কামাখ্যা বাবুর পুত্রেরা এবং পরিবারবর্গ সকলেই আসিল, আর যত বসন্তের কোকিল, সময়ের বন্ধু, যে যেখানে ছিল, সকলেই আসিল। দেবেন্দ্রনারায়ণের বন্ধু ও অনুচরবর্গ সকলেই আসিল।
বসন্ত আসিলে রাধারাণী বলিল, “তোমার কি আক্কেল ভাই বসন্ত?” বসন্ত বলিল, “কি আক্কেল ভাই রাধারাণী?”
রা। যাকে তাকে তুমি পত্র দিয়া পাঠাইয়া দাও কেন?
ব। কেন, লোকটা কি করেছে বল দেখি?
রাধারাণী তখন সকল কথা বলিল। বসন্ত বলিল, “রাগের কথা ত বটে। সুদ সুদ্ধ দেনা-পাওনা বুঝিয়া নেয়, এমন মহাজনকে যে বাড়ী চিনাইয়া দেয়, তার উপর রাগের কথাটা বটে |”
রাধারাণী বলিল, “তাই আজ আমি তোর গলায় দড়ি দিব!”
এই বলিয়া রাধারাণী যে হীরকহার রুক্মিণীকুমারকে পরাইতে গিয়াছিলেন, তাহা আনিয়া বসন্তের গলায় পরাইয়া দিলেন।
তার পর শুভ লগ্নে শুভবিবাহ হইয়া গেল।