স্কন্ধ শিরোপরে,        হরের বিহরে,
সদা ফণিবরে, ভীষণ অতি।
      বেণী ফণিবর,          তব নিরন্তর,
স্কন্ধ শিরোপর, রয় তেমতি ||
      যেইমত হরে,        কণ্ঠে বিষধরে,
তেমতি গরল, তুমিও ধর।
      কিন্তু কণ্ঠে নয়,     কিছু অধো রয়,
বিশেষিয়া বলি, ও পয়োধর ||
      যে গরল হরে,        কণ্ঠদেশে ধরে,
কাছে না এনে সে নাশিতে নারে।
      কিন্তু পয়োধরে        যে গরল ধরে,
দূর হইতেই, মানবে মারে ||
      যদি বল প্রিয়ে,       কণ্ঠে না রহিয়ে
অধোভাগে কেন, গরল রয়।
      কণ্ঠে রৈলে তবে     মুখ কাছে রবে,
মুখামৃতে বিষ, নিস্তেজ হয় ||
স্ত্রী। কি মূঢ় মানব       কোলে নিজ সব,
দুরন্ত পাবক, লয়েছে টানি।
      বিশ্বাসঘাতক,         সেই সে পাবক,
করিবে দহন, তাহা না জানি ||
পতি। দোষ দাও পরে,      নিজ দোষোপরে,
দৃষ্টি নাহি কর, কি অপরূপ।
      আপনি কেমনে         আপন নয়নে,
রেখেছো অনল, কহ স্বরূপ ||
স্ত্রী। তবে প্রেমাধার       রাখিব না আর,
নয়নে আমার, কাল অনল।
      দেখ প্রাণ ধন,         মুদিয়া নয়ন,
তাড়াই আগুন, শয্যায় চল ||
পতি। যদি তুমি প্রাণ      নাহি দিলে স্থান,
কোথায় অনল, যাইবে আর।
      পৃথিবীতে আর,      স্থান নাহি তার,
তাহে বলী শীত, বিপক্ষ তার ||
      যাইবে যথায়,        যাইবে তথায়,
দুরন্ত শাত্রব, শীত ধাইয়ে।
      এমতে ধরায়,       নাহি স্থান পায়,
শেষে জলে যায়, রয় ডুবিয়ে ||
      তাই দেখ কাল,          নিশা শেষকাল,
উঠে জল হোতে, ধূমের রাশি।
      তাই বলি প্রিয়ে,        স্থান না পাইয়ে,
হয়েছে অনল, সলিল বাসি ||
          -‘সংবাদ প্রভাকর’, ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৩