যতেক বলিল পতি, না শুনিল রসবতী,
চাহিয়ে গগন প্রতি, স্থির নেত্রে রহিল।
পল্লব নাহিক সরে, বঙ্কিমাক্ষে ভাব ভরে;
এক দৃষ্টে দৃষ্টি করে, অন্য দিক্ নহিল ||
তবে মুখ অধোকরে, অতিশয় দুঃখভরে,
কম্পাইয়ে পয়োধরে, দীর্ঘশ্বাস বহিল।
তখন নয়ন তার, উজ্জ্বল হীরকাকার,
ফেলিলেক অশ্রুধার, দুঃখে পতি কহিল ||
ওলো প্রাণ প্রেমাধার, সহে না সহে না আর,
এই বিন্দু অশ্রুধার, প্রাণে নাহি সহিল।
শুনেছি প্রবলানল, জলে করে সুশীতল,
কিন্তু তব অশ্রুজল, মোরে আরো দহিল ||
চন্দ্রমুখী কয় তায়, দেখ সখা হায় হায়,
এখনি দেখিনু যায়, গগন উপরি হে।
এই দেখি যে তারায়, প্রজ্বলিত স্বর্ণ প্রায়,
অপরূপ শোভা পায়, কতবার ধরি হে ||
মুহূর্ত্তেকে মধ্য তায়, কেহ না দেখিতে পায়,
কোথা গেল হায় হায়, স্থান পরিহরি হে।
কোথা তার এ সময়, মনোহর অঙ্গ রয়,
কোথা রয় করচয়, মরি মরি মরি হে ||
কিন্তু তো তাহারি সম, জীবন যৌবন মম,
তবে কেন তার তম, মিছামিছি করি হে।
যৌবন লাবণ্য নিয়ে, তোমার হইয়ে প্রিয়ে,
আজি আছি বিনাশিয়ে, কাল যাব মরি হে।
                     -‘সংবাদ প্রভাকর’, ২৮মে, ১৮৫২