কাননে যামিনী পরকাশে,    নিরমল নীলে শশী ভাসে।
নিশীথে নিদ্রিত বন,      নিদ্রা যায় মেঘগণ,
নিদ্রা যায় বাতাস আকাশে ||
উঠিল নীরবে আচম্বিত, প্রেমময় ললিত সঙ্গীত।
স্থির শূন্যে ভেসে যায়,       গগন গহন তায়,
শিহরিছে পুলক পূরিত ||
যেন কেহ বিরহের জ্বরে, প্রেমময়ী পরশে শিহরে।
নাথহৃদে ছিল ধনী,      গলিল শুনিয়ে ধ্বনি,
মোহে মিশে প্রাণে প্রাণেশ্বরে ||
গভীর নিশ্বাসে থামে গান,   অবকাশে তারা পায় জ্ঞান।
জানিল সে কালিকার,   সেই ধ্বনি পুনর্ব্বার,
হেথা হতে গেছে অন্য স্থান ||
প্রেয়সীরে কহিছে মন্মথ,      ধ্বনি যে জুড়ায় শ্রুতিপথ।
এখানে গেয়েছে কাল, কামিনি লো কি কপাল!
আজ ধ্বনি অন্য স্থান গত ||
আজি গীত গাইছে যথায়, চল মোরা যাইব তথায়।
কে গায় কিসের তরে,      কেন গায় স্থানান্তরে,
করি চল যাহে জানা যায় ||
নাথ সনে লক্ষ্য করি ধ্বনি, চলে বনে শশাঙ্কবদনী।
ঘন গাঁথা তরুদলে,         ঘন তম তার তলে,
ভয়ঙ্কর নীরব কেমনি ||
পূর্ব্বমত নিকুঞ্জ মণ্ডলে,      আসিল সে প্রেমিক যুগলে
পূর্ব্বমত স্বপ্নসম,         দুই রূপ নিরুপম,
যথা হইতে দ্রুত গেল চলে ||
কাঁপিয়ে বিষম ভয়ে বলে হাঁ রে বিধি।
এমন সুখেতে কেন হেন কর বিধি ||
পৃথিবীতে কোন স্থান সুখের কি নয়?
কানন বাসেও কি গো বিপদ নিশ্চয় ||
দেবতা কুপিত বলি দুজনাতে ভীত।
কি হবে তৃতীয় রাত্রে দেখিতে চিন্তিত ||
তৃতীয় নিশীথে গীত আর এক স্থানে।
পূর্ব্বমত তথা গিয়া ভয়ে মরে প্রাণে ||
সেই মত পেলে ভয় চতুর্থ রজনী।
পঞ্চম রজনীযোগে কোথায় সে ধ্বনি?