১। প্রথম প্রয়োজনীয় কথা—সত্য ভিন্ন মিথ্যা পথে যাইবে না। কলমের মুখে কখন মিথ্যা নির্গত না হয়। তাহা হইলে চাকরী থাকে না। নিতান্তপক্ষে কর্তৃপক্ষের অবিশ্বাস জন্মে। অবিশ্বাস জন্মিলে আর উন্নতি হয় না।
২। দ্বিতীয়—প্রয়োজনীয় কথা পরিশ্রম। বিনা পরিশ্রমে কখন উন্নতি হয় না। কখনও কোন কাজ পড়িয়া না থাকে।
৩। উপরওয়ালাদের আজ্ঞাকারিতা। তাঁহাদিগের নিকট বিনীত ভাব। চাকরী রাখার এবং উন্নতির পক্ষে ইহা নিতান্ত প্রয়োজনীয়। তর্ক করিও না।
৪। আপনার কাজের Rules & Hours বিশেষরূপে অবগত হইবে।
৫। কাহারও উপর অত্যাচার করিবে না। পুলিশের লোকে আসামীর উপর বড় অত্যাচার করে। অনেকের বিশ্বাস তাহা না হইলে কাজ চলে না, তাহা ভ্রান্তি। না চলে সেও ভাল। ইহা নিজে কখন করিবে না বা অধীনস্থ কাহাকেও করিতে দিবে না। ইহার কারাদণ্ড আছে।
৬। সকলের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করিবে। অধীনস্থ ব্যক্তিদিগকে সদ্ব্যবহার দ্বারা বশীভূত করিবে। কেহ শত্রু না হয়। কর্তব্য কর্মের অনুরোধে অনেকের অনিষ্ট করিতে হয়। উহার উপায় নাই। দোষীর অবশ্য দণ্ড চাই।
৭। নিষ্কারণে ভীত হইও না।
আপনার প্রণয়োপহার স্বরূপ গ্রন্থ দুইখানি পাইয়াছি। পীড়াপ্রযুক্ত এতদিন পুস্তক প্রাপ্তির সংবাদ ও পত্রের উত্তর লিখিতে পারি নাই। অপরাধ মার্জনা করিবেন। কমলাকান্তের দ্বিতীয় সংস্করণ একখণ্ড আপনার নিকট পাঠাইবার জন্য কলিকাতায় আমার কার্যকারককে লিখিয়াছি। ভরসা করি আপনার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল। ১লা অগ্রহায়ণ
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
মেজবাবুর রীতিমত চিকিৎসা করাইবে। ব্যয় জন্য কুণ্ঠিত হইবে না। আমার কাঁটালপাড়া যাওয়া দুর্ঘট। Suburban Police Court এর চার্জ আমার নিকট, Confession or Dying Declaration লিখিতে হয়, এজন্য কোথাও যাইতে বাসনা করি না। তবে নিতান্ত আবশ্যক হইলে তখন বিবেচনা করা যাইবে।
ডাক্তার যেরূপ বলিয়াছে আমার সেরূপ বোধ হয় না। কোন চিন্তার বিষয় নাই। মেজবাবুর ওরূপ জ্বর হইয়া থাকে। এক্ষণে কেমন থাকে আগামী কালই আমাকে সম্বাদ দিবে।
আমার নিজের ব্যবস্থা, এক আধ dose China দিবে। China এই অবস্থায় বলকারক।
পুঃ আমি রবিবার কাঁটালপাড়া যাইব।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
১ দফা কলিকাতা পটলডাঙ্গার ৫ নম্বর প্রতাপ চাটুয্যের গলির ভদ্রাসন বাটীর ও ৪ নম্বর দুর্গাপ্রসাদ ঘোষের নামীয় জমি যাহাতে আমি স্বত্ত্বাধিকারী ও দখলিকার আছি, আমার মৃত্যুর পর হইতে আমার বনিতা শ্রীমতী রাজলক্ষ্মী দেবী তদুভয়ের সম্পূর্ণ স্বত্তাধিকারিণী হইবেন এবং তদুভয়ের তাঁহার দান বিক্রয় ও হস্তান্তর করিবার সম্পূর্ণ অধিকার এবং তিনি উইল করিয়া অন্যকে দিয়া যাইতে পারিবেন কেবল উপদেশ বা পরামর্শ স্বরূপ আমি লিখিতেছি যে তিনি ঐ উভয় সম্পত্তি আমার জ্যেষ্ঠা কন্যা শ্রীমতী শরৎকুমারী দেবীকে উইল করিয়া দিয়া যাইবেন কিন্তু এই উপদেশের দ্বারা তাঁহার অন্যপ্রকার হস্তান্তর করার ক্ষমতা কিছুমাত্র ক্ষুণ্ণ করিতেছি না।
২ দফা আমার অপরাপর স্থাবর সম্পত্তি সম্বন্ধে উইল করার কোন প্রয়োজন দেখি না।
৩ দফা আমার মৃত্যুর পর আমার সমস্ত অস্থাবর সম্পত্তিতে আমার বনিতা আইনানুসারেই সম্পূর্ণ অধিকারিণী হইবেন এজন্য সে সম্বন্ধেও কোন উইলের প্রয়োজন নাই, আমার পুস্তকের কপিরাইট অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে গণ্য।
৪ দফা আমার কৃত সাবেক উইল সমস্ত বাতিল ও নামঞ্জুর হইল। ইতি—১৮৯০। ২৩ মে—





