অন্যত্র তাও না—কেবল আনন্দ। যে যেখানে সমুখে পড়ে, তাহাকেই ঈশ্বরচন্দ্র তাহার গালে এক চড়, নহে একটা কাণমলা দিয়া ছাড়িয়া দেন—কারণ আর কিছুই নয়, দুই জনে একটু হাসিবার জন্য। কেহই চড় চাপড় হইতে নিস্তার পাইতেন না। গবর্ণর জেনেরল, লেপ্টেনাণ্ট গবর্ণর, কৌন্‌সিলের মেম্বর হইতে, মুটে, মাঝি, উড়িয়া বেহারা কেহ ছাড়া নাই। এক একটি চড় চাপড় এক একটি বজ্র—যে মারে, তাহার রাগ নাই, কিন্তু যে খায়, তার হাড়ে হাড়ে লাগে। তাতে আবার পাত্রাপাত্র বিচার নাই। যে সাহসে তিনি বলিয়াছেন,—

বিড়ালাক্ষী বিধুমুখী, মুখে গন্ধ ছুটে।

আমাদের সে সাহস নাই। তবে বাঙ্গালীর মেয়ের উপর নীচের লিখিত দুই চরণে আমাদের ঢেরা সই রহিল—

সিন্দুরে বিন্দুসহ কপালেতে উল্কি।

নসী জশী ক্ষেমী বামী, রামী শ্যামী গুল্‌কী ||

মহারাণীকে স্তুতি করিতে করিতে দেশী Agitatorদের কাণ টানাটানি—

তুমি মা কল্পতরু,        আমরা সব পোষা গোরু,
শিখি নি সিং বাঁকানো,
কেবল খাব খোল বিচালি ঘাস।
যেন রাঙ্গা আমলা,           তুলে মামলা,
গামলা ভাঙ্গে না।
       আমরা ভুসি পেলেই খুসি হব,
  ঘুসি খেলে বাঁচব না ||

সাহেব বাবুরা কবির কাছে অনেক কাণমলা খাইয়াছেন—একটা নমুনা—

যখন আস্‌বে শমন,        করবে দমন,
কি বোলে তায় বুঝাইবে।
বুঝি হুট্ বোলে           বুট পায়ে দিয়ে
চুরুট ফুঁকে স্বর্গে যাবে?

এক কথায়, সাহেবদের নৃত্যগীত—

গুড়ু গুড়ু গুম গুম লাফে তাল।

তারা রারা রারা রারা লালা লালা লাল ||

সখের বাবু, বিনা সম্বলে—

তেড়া হোয়ে তুড়ি মারে, টপ্পা গীত গেয়ে।

গোচে গাচে বাবু হন, পচাশাল চেয়ে ||

কোনরূপে পিত্তি রক্ষা, এঁটোকাঁটা খেয়ে।

শুদ্ধ হন ধেনো গাঙ্গে, বেনো জলে নেয়ে ||