দেখিতে দেখিতে দেখিলাম-আমিও একটা মস্ত ঢেঁকি-কমলাশ্রমে লম্বমান হইয়া পড়িয়া আছি; নেশার গড়ে মনোদুঃখ ধান্য পিষিয়া দপ্তর চাউল বাহির করিতেছি। মনে মনে অহঙ্কার জন্মিল-এমন চাউল ত কাহারও গড়ে হইতেছে না। তখন ইচ্ছা হইল-এ চাউল মনুষ্য-লোকের উপযুক্ত নহে, আমি স্বর্গে গিয়া ধান ভানিব। তখনই স্বর্গে গেলাম-“অশ্বমনোরথে”। স্বর্গে গিয়া, দেবরাজকে প্রণাম করিয়া বলিলাম, “হে দেবেন্দ্র! আমি শ্রীকমলাকান্ত ঢেঁকি-স্বর্গে ধান ভানিব।”

দেবেন্দ্র বলিলেন, “আপত্তি কি-পুরস্কার চাই কি?”

আমি। উর্ব্বশী মেনকা রম্ভা।

দেবরাজ। উর্ব্বশী মেনকা পাইবে না-আর যাহা চাহিলে, তাহা ত মর্ত্ত্যলোকেও তুমি পাইয়া থাক,-আটটার হিসাবে।

আমি দুর্ম্মুখ-বলিলাম, “কি ঠাকুর, অষ্টরম্ভা! সে কি আজকাল নরলোকের পাবার যো আছে? সে আজকাল দেবতাদেরই একচেটে।”

সন্তুষ্ট হইয়া দেবরাজ আমাকে বকশিশ হুকুম করিলেন,-এক সের অমৃত, আর এক ঘণ্টার জন্য উর্ব্বশীর সঙ্গীত। চৈতন্য হইয়া দেখিলাম, পাশে ঘটিতে এক সের দুগ্ধ,-আর প্রসন্ন, দাঁড়াইয়া চীৎকার করিতেছি-“নেশাখোর!” “বিট্‌লে!” “পেটার্থী!” ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি উর্ব্বশীকে বলিলাম, “বাইজি! এক ঘণ্টা হইয়াছে-এখন বন্ধ কর।”