বিবিধ প্রবন্ধ, প্রথম খণ্ড - উত্তরচরিত
যখন রাম, সীতার বধূবেশ মনে করিয়া বলিলেন,
প্রতনুবিরলৈঃ প্রান্তোন্মীলন্মনোহরকুন্তলৈ-
র্দ্দশনমুকুলৈর্মুগ্ধালোকং শিশুর্দধতী মুখম্।
ললিতললিতৈর্জাৎস্নাপ্রায়ৈরকৃত্রিমবিভ্রমৈ-
রকৃত মধুরৈরম্বানাং মে কুতূহলমঙ্গকৈঃ || ১
র্দ্দশনমুকুলৈর্মুগ্ধালোকং শিশুর্দধতী মুখম্।
ললিতললিতৈর্জাৎস্নাপ্রায়ৈরকৃত্রিমবিভ্রমৈ-
রকৃত মধুরৈরম্বানাং মে কুতূহলমঙ্গকৈঃ || ১
যখন গোদাবরীতীর স্মরণ করিয়া কহিলেন,
কিমপি কিমপি মন্দং মন্দমাসসত্তিযোগা-
দবিরলিতকপোলং জল্পতোরক্রমেণ।
অশিথিলপরিরম্ভব্যাপৃতৈকৈকদোষ্ণো-
রবিদিতগতযামা রাত্রিরেব ব্যরংসীৎ || ২
দবিরলিতকপোলং জল্পতোরক্রমেণ।
অশিথিলপরিরম্ভব্যাপৃতৈকৈকদোষ্ণো-
রবিদিতগতযামা রাত্রিরেব ব্যরংসীৎ || ২
যখন যমুনাতটস্থ শ্যামবট স্মরণ করিয়া কহিলেন,
অলসলুলিতমুগ্ধান্যধ্বসঞ্জাতখেদা-
দশিথিলপরিরম্ভৈর্দত্তসংবাহনানি।
পরিমৃদিতমৃণালীদুর্ব্বলান্যঙ্গকানি,
ত্বমুরসি মম কৃত্বা যত্র নিদ্রামবাপ্তা || ৩
দশিথিলপরিরম্ভৈর্দত্তসংবাহনানি।
পরিমৃদিতমৃণালীদুর্ব্বলান্যঙ্গকানি,
ত্বমুরসি মম কৃত্বা যত্র নিদ্রামবাপ্তা || ৩
যখন নিদ্রাভঙ্গান্তে রামকে দেখিতে না পাইয়া কৃত্রিম কোপে সীতা বলিলেন,—
ভোদু, কুবিস্মং জই তং পেক্খমাণা অত্তণো পহবিস্মং। ৪
তখন কত প্রেম উছলিয়া উঠিতেছে! কিন্তু এই অতি বিচিত্র কবিত্বকৌশলময় চিত্রদর্শনে আরও কতই সুন্দর কথা আছে! লক্ষ্মণের সঙ্গে সীতার কৌতুক, “বচ্ছ ইঅং বি অবরা কা?”—মিথিলা হইতে বিবাহ করিয়া আসিবার কথায় দশরথকে রামের স্মরণ—“স্মরামি! হস্ত স্মরামি!” মন্থরার কথায় রামের কথা অন্তরিকতকরণ ইত্যাদি। সূর্পনখার চিত্র দেখিয়া সীতার ভয় আমাদের অতি মিষ্ট লাগে,—
১ ”মাতৃগণ তৎকালে বালা জানকীর অঙ্গসৌষ্ঠবাদি দেখিয়া কি সুখীই হইয়াছিলেন, এবং ইনিও অতি সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম ও অনতি-নিবিড় দন্তগুলি, তাহার উভয়পার্শ্বস্থ মনোহর কুন্তলমনোহর মুখশ্রী, আর সুন্দর চন্দ্রকিরণ-সদৃশ নির্ম্মল এবং কৃত্রিমবিলাসরহিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হস্ত পদাদি অঙ্গদ্বারা তাঁহাদের আনন্দের একশেষ করিয়াছিলেন |” নৃসিংহবাবুর অনুবাদ। এই কবিতাটি বালিকা বধূর বর্ণনার চূড়ান্ত|
২ “একত্র শয়ন করিয়া পরস্পরের কপোলদেশ পরস্পরের কপোলের সহিত সংলগ্ন করিয়া এবং উভয়ে এক এক হস্ত দ্বারা গাঢ় আলিঙ্গন করিয়া অনবরত মৃদুস্বরে ও যদৃচ্ছাক্রমে বহুবিধ গল্প করিতে করিতে অজ্ঞাতসারে রাত্রি অতিবাহিত করিতাম |”
৩ “যেখানে তুমি পথজনিত পরিশ্রমে ক্লান্তা হইয়া ঈষৎ কম্পবান্, তথাপি মনোহর এবং গাঢ় আলিঙ্গনকালে অত্যন্ত মর্দ্দনদায়ক, আর দলিত মৃণালিনীর ন্যায় ম্লান ও দুর্ব্বল হস্তাদি অঙ্গ আমার বক্ষঃস্থলে রাখিয়া নিদ্রা গমন করিয়াছিল|” নৃসিংহবাবুর অনুবাদ।
৪ হৌক— আমি রাগ করিব—যদি তাঁহাকে দেখিয়া না ভুলিয়া যাই।