ইংরাজস্তোত্র
(মহাভারত হইতে অনুবাদিত)

হে ইংরাজ! আমি তোমাকে প্রণাম করি। ১ ||

তুমি নানাগুণে বিভূষিত, সুন্দর কান্তিবিশিষ্ট, বহুল সম্পদ্‌যুক্ত; অতএব হে ইংরাজ! আমি তোমাকে প্রণাম করি। ২ ||

তুমি হর্ত্তা-শত্রুদলের; তুমি কর্ত্তা-আইনাদির; তুমি বিধাতা-চাকরি প্রভৃতির। অতএব হে ইংরাজ! আমি তোমাকে প্রণাম করি। ৩ ||

তুমি সমরে দিব্যাস্ত্রধারী, শিকারে বল্লমধারী, বিচারাগারে অর্দ্ধ ইঞ্চি পরিমিত ব্যাসবিশিষ্ট বেত্রধারী, আহারে কাঁটা-চাম্‌চেধারী; অতএব হে ইংরাজ! আমি তোমাকে প্রণাম করি। ৪ ||

তুমি একরূপে রাজপুরী মধ্যে অধিষ্ঠান করিয়া রাজ্য কর; আর একরূপে পণ্যবীথিকা মধ্যে বাণিজ্য কর; আর একরূপে কাছাড়ে চার চাষ কর; অতএব হে ত্রিমূর্ত্তে! আমি তোমাকে প্রণাম করি। ৫ ||

তোমার সত্ত্বগুণ তোমার প্রণীত গ্রন্থাদিতে প্রকাশ; তোমার রজোগুণ তোমার কৃত যুদ্ধাদিতে প্রকাশ; তোমার তমোগুণ তোমার প্রণীত ভারতবর্ষীয় সম্বাদপত্রাদিতে প্রকাশ।-অতএব হে ত্রিগুণাত্মক! আমি তোমাকে প্রণাম করি। ৬ ||

তুমি আছ, এই জন্যই তুমি সৎ! তোমার শত্রুরা রণক্ষেত্রে চিৎ; এবং তুমি উমেদারবর্গের আনন্দ; অতএব হে সচ্চিদানন্দ! তোমাকে আমি প্রণাম করি। ৭ ||

তুমি ব্রহ্মা-কেন না, তুমি প্রজাপতি; তুমি বিষ্ণু-কেন না, কমলা তোমার প্রতিই কৃপা করেন; এবং তুমি মহেশ্বর-কেন না, তোমার গৃহিণী গৌরী। অতএব হে ইংরাজ! আমি তোমাকে প্রণাম করি। ৮ ||

তুমি ইন্দ্র, কামান তোমার বজ্র; তুমি চন্দ্র, ইন্‌কম টেক্‌স তোমার কলঙ্ক; তুমি বায়ু, রেইলওয়ে তোমার গমন; তুমি বরুণ, সমুদ্র তোমার রাজ্য; অতএব হে ইংরাজ! আমি তোমাকে প্রণাম করি। ৯ ||

তুমিই দিবাকর, তোমার আলোকে আমাদের অজ্ঞানান্ধকার দূর হইতেছে; তুমিই অগ্নি-কেন না, সব খাও; তুমিই যম, বিশেষ আমলাবর্গের। ১০ ||

তুমি বেদ, আর ঋক্‌যজুষাদি মানি না; তুমি স্মৃতি-মন্বাদি ভুলিয়া গিয়াছি; তুমি দর্শন ন্যায়, মীমাংসা প্রভৃতি তোমারই হাত। অতএব হে ইংরাজ! তোমাকে প্রণাম করি। ১১ ||

হে শ্বেতকান্ত! তোমার অমল-ধবল দ্বিরদ-রদশুভ্র মহাশ্মশ্রুশোভিত মুখমণ্ডল দেখিয়া আমার বাসনা হইয়াছে, আমি তোমার স্তব করিব; অতএব হে ইংরাজ! আমি তোমাকে প্রণাম করি। ১২ ||

তোমার হরিতকপিশ পিঙ্গললোহিত কৃষ্ণশুভ্রাদি নানা বর্ণশোভিত, অতিযত্নরঞ্জিত, ভল্লুকমেদমার্জ্জিত কুন্তলাবলি দেখিয়া আমার বাসনা হইয়াছে, আমি তোমার স্তব করিব; অতএব হে ইংরাজ! আমি তোমাকে প্রণাম করি। ১৩ ||

তুমি কলিকালে গৌরাঙ্গাবতার, তাহার সন্দেহ নাই। হ্যাট তোমার সেই গোপবেশের চূড়া; পেণ্টুলন সেই ধড়া-আর হুইপ্ সেই মোহন মুরলী-অতএব হে গোপীবল্লভ! আমি তোমাকে প্রণাম করি। ১৪ ||

হে বরদ! আমাকে বর দাও। আমি শামলা মাথায় বাঁধিয়া তোমার পিছু পিছু বেড়াইব-তুমি আমাকে চাকরি দাও। আমি তোমাকে প্রণাম করি। ১৫ ||