রজনী
তৃতীয় পরিচ্ছেদ
আমি বলিলাম, “আছে বোধ হয়।”
অমরনাথ ঈষৎ হাসিয়া বলিলেন, “বোধ হয় নয়, সে আছে। আমি তাহাকে বিবাহ করিব স্থির করিয়াছি |”
আমি অবাক হইলাম। অমরনাথ বলিতে লাগিলেন, “আমি রাজচন্দ্রের নিকটে এই কথা বলিতেই গিয়াছিলাম। তাহাকে বলা হইয়াছে। এক্ষণে আপনাদিগের সঙ্গে একটা কথা আছে। যে কথা বলিব, তাহা মহাশয়ের পিতার কাছে বলাই আমার উচিত ; কেন না, তিনি কর্তা। কিন্তু আমি যাহা বলিব, তাহাতে আপনাদিগের রাগ করিবার কথা। আপনি সর্বাপেক্ষা স্থিরস্বভাব এবং ধর্মজ্ঞ, এজন্য আপনাকেই বলিতেছি |”
আমি বলিলাম, “কি কথা মহাশয়?”
অ। রজনীর কিছু বিষয় আছে।
আমি। সে কি? সে যে রাজচন্দ্রের কন্যা।
অ। রাজচন্দ্রের পালিত কন্যা মাত্র।
আমি। তবে সে কাহার কন্যা? কোথায় বিষয় পাইল? এ কথা আমরা এতদিন শুনিলাম না কেন?
অ। আপনারা যে সম্পত্তি ভোগ করিতেছেন, ইহাই রজনীর। রজনী মনোহর দাসের ভ্রাতুষ্কন্যা।
একবার, প্রথমে চমকিয়া উঠিলাম। তার পর বুঝিলাম যে, কোন জালসাজে জুয়াচোরের হাতে পড়িয়াছি। প্রকাশ্যে উচ্চৈ:হাস্য করিয়া বলিলাম, “মহাশয়কে নিষ্কর্মা লোক বলিয়া বোধ হইতেছে। আমার অনেক কর্ম আছে। এক্ষণে আপনার সঙ্গে রহস্যের আমার অবসর নাই। আপনি গৃহে গমন করুন |”
অমরনাথ বলিল, “তবে উকীলের মুখে সম্বাদ শুনিবেন |”